বাংলাদেশে গানের জগতে রুলস ভয়ঙ্কর: আসিফ

বিনোদন প্রতিবেদক
 | প্রকাশিত : ১১ জুলাই ২০২০, ০৯:০৫

কখনোই বলিনি আমি খুব ভালো। আবার এটাও নিশ্চিত, মেকী মিথ্যা বানোয়াট কিছু বলে আমাকে বুঝিয়ে দেয়া যাবে না। বেড়ে উঠেছি কমান্ডো ট্রেনিং নিয়ে, কমান্ডোরা কখনো গাদ্দারী শিখে না। যে সোসাইটির শিক্ষা নিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছি সেটা আসলে স্পোর্টসের সঙ্গে যায়। খেলার হার-জিতের হিসাব নিকাশের পরও একটা জিনিস থাকে, সেটা হচ্ছে ক্রীড়াসুলভ মানসিকতা।

মাঠের খেলা মাঠেই শেষ, আক্রোশ নিয়ে ঘুমাতে যেতাম না। পরবর্তী রণকৌশল কী হবে সেটার ছক সাজাতাম। সবসময় জয়ের চিন্তা নিয়েই পরিকল্পনা করতাম। স্পোর্টসম্যানশিপে গুটিবাজীর জায়গা নেই। তা ছাড়া খেলাটা মাঠেই খেলতে হবে। টেবিলে যারা খেলে তাদের আমরা সহজেই চিহ্নিত করতে পারতাম। খেলার মাঠে নানা অসংগতির মাঝেও প্রোটেষ্ট সিস্টেম ছিল। একটা বিচারিক প্লাটফর্ম সবসময় থাকে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও আছে সবার।

খেলার জগৎ থেকে এসেছি গানে, ভেবেছিলাম রুলস একই। আমরা মাঠে উজ্জ্বীবিত হতাম গানে, তাই এ জগতের প্রতি অন্যরকম সমীহ কাজ করতো। আমি সম্পূর্ন ভুল ছিলাম, বাংলাদেশে গানের জগতে রুলস ভয়ঙ্কর। সামনাসামনি দু’পক্ষের সম্পর্ক দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে কী বিষাক্ত নিঃশ্বাস পুষে রেখে হাসছেন উনারা। শুধু বাংলাদেশে নয়, মুম্বাইতেও স্বল্প সময়ের সফরে দেখলাম একই রুপ।

আমার গুরুভাই দেশসেরা রিদম প্লেয়ার লিটন ডি কষ্টা ক্যারিয়ারের শুরুতেই বলেছিলেন, এ জগতে হাসিমুখে কোলাকুলি করলেও মনে মনে পলিথিনের মত একটা অদৃশ্য ব্যারিয়ার রাখবে। আমি উনার কথায় খুব অবাক হয়েছিলাম সত্যি, তবে নিজের মনের কথাই শুনেছি। গানের জগতে স্পোর্টসম্যানশিপ বলে কোনও শব্দ নেই। এখানে চলে সাকরাইন উৎসব, পাশে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে আপনি হয়ে যাবেন সুতো কাটা ঘুড়ি।

গানের জগতে দেখেছি মুরুব্বীকে সালাম করে চোখের আড়াল হলেই কীভাবে গালি দেয়। যে সামনে নাই তাকে নিয়ে গীবত গাওয়া ইন্ডাস্ট্রির মূল স্টাইল। কার সঙ্গে কার কখন কী সম্পর্ক, এটা বোঝা ষড়ঋতুর চেয়েও ভয়ঙ্কর। প্রকৃতিও এখানকার রঙ দেখে লজ্জ্বা পায়। চেয়েছিলাম স্পোর্টসম্যানশিপ চালু করতে, সুপার ফ্লপ হয়েছি। মেকী সম্পর্কের অন্তরালে এখানে চলে ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর খেলা। এ খেলায় ক্যারিয়ার পর্যন্ত শেষ হয়ে যেতে পারে। কেউ কেউ এটাকে বলে ইন্ডাস্ট্রির পলিটিকস, আমি বলি নোংরামী।

এ জগতে এসেই প্রথম জেনেছি গুনী হলেই মানুষ ভালো হয় না। শুকরিয়া, মহান আল্লাহ আমাকে সক্ষমতা আর মস্তিষ্ক দিয়ে পাঠিয়েছেন যেন এই সো কলড পলিটিশিয়ানদের চক্করে পড়ে হারিয়ে না যাই। এ জগতেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছি, তাই সংগীতের প্রতি সম্মান জানিয়েই কোনও সংগঠনে জড়াবো না। এখন আমার প্রচুর গান রেকর্ডিং করতে হবে, প্রচুর লাইভ মিউজিক করতে হবে। ফিরে যাচ্ছি পুরনো খেলার জগতে। বত্রিশ বছর আগের স্পোর্টসম্যান আসিফ জন্ম নেয়া সেই ক্রিকেটার্স কুমিল্লা সংগঠনটি আবার গড়ে তুলবো। আবার কোচিং শুরু করবো, আসিফদের বেশে নতুন নতুন ক্রিকেটার জন্ম নিবে। বেয়াদব না, খেলোয়াড় প্রোডিউস করবো। সংগীতটায় সবদিক থেকে মূর্খই রয়ে গেলাম, তবে গান গেয়ে যাব সেরা দম নিয়েই ইনশাআল্লাহ ...

গায়ক আসিফ আকবরের ফেসবুক থেকে

ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :