করোনাকালে অনলাইন শিক্ষায় হিত-অহিত

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০২০, ১৯:৩২

তৃপ্তি সেন

করোনাভাইরাস মহামারীতে বেশি সংকটে পড়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। করোনাকালে সরকারের ছুটির আওতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পেয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খুলে দিলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো ছুটি চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়েছে। একটা পর্যায়ে এসে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংসদ টিভিতে অনলাইন ক্লাস প্রচার করে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি লাঘবের চষ্টো করছে সরকার।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এতে শিক্ষার্থীরা পুনরায় পাঠে মনোনিবেশ করতে থাকে। অনলাইন ক্লাসগুলোর জন্য জুম ভিডিও অ্যাপস, গুগল ক্লাসরুম, ফেসবুক লাইভ বা মেসেঞ্জার চ্যাটরুম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এছাড়া ভিডিও ধারণ করে ইউটিউবের মাধ্যমেও শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে।

উন্নত বিশ্বে আগেই অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান থাকলেও করোনাকালে বাংলাদেশে এ ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম এখন আলোচনায় রয়েছে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে সুফলের পশাপাশি কিছু সংকট সমস্যাও রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আগে থেকেই ছিলো কিন্তু এই ই-লার্নিংয়ের সুযোগে আরো বেশি করে তারা ইলেকট্রনিকস ডিভাসের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। অনলাইনে প্রতিদিন গড়ে ১০ ঘন্টার মতো তারা ব্যয় করছে। তরুণ প্রজন্ম এমনিতেই অনলাইন আসক্তিতে এগিয়ে ছিলো এখন তা আরো বেড়ে গেলো।

অনলাইন ক্লাসের সময় ও তার পরবর্তী সময়েও তারা এসব ইলেকট্রনিক গেজেট থেকে মুখ ফেরাতে পারছে না। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরণের স্যোশাল সাইট ও গেম সাইট বা নিষিদ্ধ সাইটে আসক্ত হয়ে পড়ছে।

পড়ালেখার নামে তারা চ্যাটিংয়ের দীর্ঘ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। ভার্চুয়াল দুনিয়া তাদের কাছে রঙিন পৃথিবী হয়ে ধরা দিচ্ছে। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। মানসিক দিকের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অধিক সময় মোবাইল বা কম্পিউটারে বসে থাকার কারণে তাদের চোখে সমস্যা দেখা দিচ্ছে আবার জয়েন্ট পেইন ও অলসতা দেখা দিচ্ছে। এছাড়া ভার্চুয়াল বিভিন্ন সম্পর্কে তারা জড়িয়ে পড়ছে সহজেই।

অনলাইল শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিকল্প হিসেবে কাজ করলেও এই শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের তরুণ ও উঠতি বয়সী কিশোর কিশোরীদের সম্ভবনাময় জীবনকে অনেকাংশে স্থবির করে দিচ্ছে। আমরা দ্রুতই এই করোনার মহামারী থেকে মুক্তি চাই এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় দেখিতে চাই।

লেখক: বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ নির্ঝর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট।