জামালপুরে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২০, ২১:৪২

যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রবিবার দুপুরে বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ি উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের। তবে বানভাসীদের দুর্ভোগ কমাতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন।

দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ফের দুর্ভোগের আশঙ্কায় রয়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষরা। সব চেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় পড়েছে এসব এলাকার খেঁটে খাওয়া দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষরা।

রবিবার সকালে জেলার ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গবাদি পশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে বের হয়েছে বানভাসীরা।

তাদের একজন ষাটোর্ধ আব্দুস সালামের সাথে কথা বলে জানা যায়, বন্যার পানি কমে যাওয়ায় বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে আবারো পানি বেড়ে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে তারা। তাই আশ্রয়ের খোঁজে বের হয়েছে তারা। আপাতত দুই-একদিন চলার মতো খাবার আছে তাদের। যদি দ্রুত সরকারি সহায়তা না পান, তাহলে দুর্ভোগে পড়তে হবে তাদের। তাই তিনি ত্রাণের দাবি জানান।

একই এলাকার বাসিন্দা সেলিম আব্বাস জানান, কয়েকদিনের বন্যায় তার পাটের অনেক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু পানি কমার সাথে সাথে পাট কাটার কথা চিন্তা করলেও আবার পানি বেড়ে যাওয়ায় এবার পাটে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারা। তাই সরকারি সহযোগিতার দাবি করেন তিনি।

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, জেলা প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে পানিবন্দি ত্রাণের যোগ্য সকলকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী জেলার ৭টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে ৪৯টি ইউনিয়নের ৩৫১টি গ্রাম। এছাড়া ৯৩ হাজার ২২৫টি পরিবারের ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬২৩ জন সরাসরি পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৩ হাজার ৩৪৩ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে প্রান্তিক কৃষকেরা। এছাড়া ১২৬ কিলোমিটার আংশিক কাঁচা রাস্তা ও ২৪ কিলোমিটার আংশিক পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্যার পানির তোড়ে ৪৫৭টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও ৬ হাজার ৩০৬টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘরবাড়ি ছাড়াও ৩৫৫টি নলকূপ ও ৩৮১টি ল্যাট্রিন, ৪১টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৪টি ব্রিজ কালভার্ট ও ৩ কিলোমিটার আংশিক বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এবারের বন্যায় পুরো জেলায় শিশুসহ ১০ জন বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :