‘পাট কাডুম না, ক্ষ্যাতেই পচুক’

তালুকদার আতিক
 | প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০২০, ০৯:৫৬

‘ভাবছি এবার পাট কাটুম না। ক্ষ্যাতেই থাকবো। পাট কাটা, জাক দেয়া ও ধোয়ার পেছনে যে খরচ হবে সেই খরচই উঠবো না, তাই ক্ষ্যাতেই পাট পচুক। তাতে যদি একটু সার হয়।’

বলছিলেন মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার উত্তর রাজদী গ্রামের কৃষক রাকিব। এবার ওই কৃষকের ক্ষেতে পাটের ফলন ভালো হয়নি। রাকিবের মতো উপজেলার অনেক কৃষকই পাট চাষ করে ক্ষতির মুখে। উৎপাদন খরচই উঠবে না।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবছর ফলন ভালো হয়নি। একদিকে করোনায় আয় রোজগার কমে গেছে। অন্যদিক অর্থকরী ফসল পাটের ফলন আশানুরুপ না হওয়ার ক্ষতির মুখে তারা।

কালকিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চাষী বারেক তালুকদার বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার পাটের ভালো ফলন হয়নি। আবহাওয়া যদি ভাল থাকে তাহলে পাটের উৎপাদন ভাল হয়।

তিনি বলেন যখন বৃষ্টির প্রয়োজন তখন বৃষ্টি হয়নি। যখন বৃষ্টির প্রয়োজন নেই তখন এক টানা দু-তিন দিন বৃষ্টি হয়ে পাট সব তলিয়ে গেছে।

গোপালপুর গ্রামের চাষী সিরাজ সরদার বলেন, আমাদের এলাকায় চৈত্র মাসে পাট চাষ শুরু হয়। তাই চৈত্র মাসের শুরুতে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু এ বছর চৈত্র মাসে বৃষ্টি হয়নি তেমন একটা। ফলে সময়মতো পাট চাষ করা যায়নি। অনেকে আবার জমিতে কৃত্রিমভাবে সেচ দিয়ে পাটের বীজ বুনেছে। এতে খরচ বাড়লেও পাট ভালো হয়নি।

বালিগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, পাটের ভালো ফলন করার জন্য অনেক পরিচর্যা করেছি। বাজ পাট কাটা পর্যন্ত দুইবার নিড়ানি, কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করেছি। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে। কিন্তু পাট বিক্রি করার সময় আমরা যে দাম পাই তাতে কামলা ও খরচের টাকাই ভালো করে ওঠে না।

উপজেলার গোপালপুর, ফাসিয়াতলা ও কালকিনি হাটে ঘুরে দেখা গেছে, এখন প্রতি মন পাট বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়।

কালকিনি উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার ফরিদ উদ্দিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, কালকিনিতে এবছর ৪৭৫০ একর জমিতে তোষা পাট ও ২০০০ একর জমিতে মেস্তা পাট চাষাবাদ করা হয়।

কালকিনি উপজেলা কৃষি অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর পাট চাষে অনেক বিঘ্ন ঘটে। যার কারণে এ বছর তেমন একটা সুবিধাজনক ফলন হয়নি।

তিনি আরো বলেন গতবছর প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ৮ বেলের মতন পাট উৎপাদন হয়। এক বেল সমান ৫ মন। কিন্তু এবছর পাটের ভালো ফলন না হওয়ায় অনেক কৃষকের খরচই উঠবে না।

এবছরের পাটের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাট কাটার জমিতে ভালো জাতের আমনের চারা লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :