দেড় হাজার টাকার জন্য আহাজারি

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২০, ১৩:৩৯

মাহবুব কবির মিলন

আচ্ছা আপনাদের কারো বিশ্বাস হয়, মাসে মাত্র দেড় হাজার টাকা পাওয়ার জন্য আহাজারি করছে কেউ। এই দেড় হাজার টাকা তাঁদের সংসারে অনেক অনেক কিছু বর্তমান যুগে। যে যুগ আমরা সবাই দেখছি বর্তমানে।

হ্যা, আমি দেখছি ইনবক্সে জ্বলজ্বল করছে হাহাকারগুলো এবং বিশ্বাস করেছি। হতবাক নয়নে তাকিয়ে থেকেছি। বারবার মনে হয়েছে একটা শুন্য কম দেয়নি তো!! মাসে মাত্র ১৫০০/ টাকা।

কয়েকজন সাহায্য চেয়েছেন, তাঁদের বাবা চাকুরি হতে অবসরের পর এককালিন পেনশন বিক্রি করে পরবর্তীতে কেউ মারা গিয়েছেন, কেউ পংগু। চিকিৎসা করতে গিয়ে সব শেষ। মায়ের নামে চিকিৎসা ভাতা করতে গিয়ে আটকে আছে অনেক দিন ধরে। সেই মাসিক দেড় হাজার টাকা ভাতা তাঁদের কাছে আসমানের চাঁদ পাওয়ার সমান।

দেড় বছর ধরে আটকে আছে চিকিৎসা ভাতা, এমন একজন বাবাহারা মেয়ের ইনবক্স পেয়ে চেষ্টা করলাম। দিন দশেকের মধ্যে সব রেডি হয়ে গেছে। এই সপ্তাহে দেড় বছরের মাসিক দেড় হাজার করে এক সাথে টাকা পেয়ে যাবে তাঁরা।
মেয়েটি জানিয়েছে এই টাকা পেলে তার অসুস্থ মায়ের চিকিতসা করতে পারবে। একজন জানিয়েছে, মাসিক এই চিকিৎসা ভাতা পেলে সামান্য হয়ত খেতে পারবে তাঁরা।

এখন সন্দেহ হচ্ছে, সরকার আমাকে জনগণের টাকায় যে বেতন প্রদান করে, তার সামান্য অংশ হালাল হচ্ছে কিনা! কতটা হারামের দায় বয়ে বেড়াতে হবে বাকি জীবন।

এই সপ্তাহে টাকা পাবে যে অসহায় পরিবারটি, তার ক্রেডিট পুরোটাই দিতে হবে রেলের চট্টগ্রাম অঞ্চলের এফএ এন্ড সিএও অডিট ক্যাডারের কর্মকর্তা আমার ব্যাচমেট বন্ধু কামরুন্নাহারকে। রেলের বেতনভাতা পেনশনের যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর চেষ্টা আর আন্তরিকতা দেখে মনে এই মেয়েটি আমার মায়ের পেটের বোন।

এই রেলের (পূর্বাঞ্চল) পেনশন, ইনক্রিমেন্ট নিয়ে তাঁর অবদানের খবর পরে দেব আলাদা করে। আল্লাহ সর্বোচ্চ ভাল করুন তাঁর।
অনেকের পেনশন আর চাকুরিকালিন মৃত্যু জ্বনিত কারণে আর্থিক অনুদান প্রাপ্তিতে সাহায্য করেছি। জানি না তা আল্লাহর সন্তুষ্টির খাতায় যোগ হয়েছে কিনা।

যে দেশ, জাতি সমাজে বুকের রক্ত চিরে বেদনার আর্তচিৎকার ভেদ করে হাজার কোটি টাকা ভেসে বেড়ায় আকাশে বাতাসে, সেখানে মাত্র দেড় হাজার টাকার হাহাকার বড় বেমানান বটে।

লেখক: অতিরিক্ত সচিব, রেলওয়ে মন্ত্রণালয়

ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এসকেএস