আলফাডাঙ্গায় নিম্নমানের চাল মেশানোর সময় হাতেনাতে ধরা

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২০, ১৬:২১

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভাল চালের সঙ্গে নিম্নমানের চাল মেশানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ একরাম হাসান খান শ্রমিক দিয়ে খাদ্যগুদামে রাখা ভিজিডির চালের সঙ্গে নিম্নমানের চাল মিশিয়ে বস্তায় ভরছিলেন। গত তিন দিন ধরে খাদ্যগুদামেই এই নিম্নমানের চাল মেশানো হচ্ছিল এমন খবরের।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি সরকারি খাদ্যগুদামের ভাল চালের সঙ্গে নিম্নমানের চাল মিশিয়ে বস্তায় ভরার ঘটনার সত্যতা পান। এ সময় নিম্নমানের ৪২ বস্তা চাল খাদ্যগুদামের ভেতরে ছিল। আরও বেশকিছু নিম্নমানের চালের সঙ্গে ভাল চাল মেশানো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিল। সেগুলো বস্তায় ভরা হচ্ছিল। উপজেলা চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে ওই নিম্নমানের চাল বস্তাভর্তি করতে পারেনি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ একরাম হোসেন খান জানান, চলতি চাল ক্রয় বছর ৩৮৫ মেট্রিক টন চাল ক্রয় ধার্য্ হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ১০২ মেট্রিকটন চাল উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাই নূরুজ্জামানের মালিকানাধীন কুসুমদি গ্রামে অবস্থিত 'নূর এন্ড ব্রাদার্স রাইচ মিল' এবং ফজলুর রহমানের মালিকাধিন 'বিসমিল্লাহ রাইচ মিল' থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি চাল কোথা থেকে ক্রয় করা হয়েছে- তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

সরকারি গোডাউনে নিন্মমানের চাল মেশানোর প্রসঙ্গে এই খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, অনেক সময় মিলারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত চালের সব বস্তা পরীক্ষা করা হয় না। এই কারণে এমনটি হতে পারে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান বলেন, চাল মেশানোর খবর পেয়ে দ্রুত আমি গোডাউন যাই। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, আমি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, আমি বিষয়টি জানার সাথে সাথে ইউএনও-কে জানাই। ব্যবস্থা নিতে বলেছি। খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ একরাম হোসেন খান ২০ টন নিম্নমানের চাল ভাল চালের সঙ্গে লেবার দিয়ে মিশিয়েছে। তিনি কেন মানুষকে এভাবে ঠকিয়ে যাচ্ছেন, তা স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।

ফরিদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সাহিদার রহমান বলেন, খবর পেয়েই আমি দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত টিম গঠন করা হবে। নিম্নমানের চালের অস্তিত্ব পেয়েছি। তিনি বলেন, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা দোষী প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, খাবার চালে ভেজাল বা পচা চাল মেশানো ঘটনার সত্যতা মিললে কোন ছাড় দেওয়া হবে না, সে যেই হোক না কেন। সাধারন মানুষকে ঠকিয়ে পার পাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এলএ)