রাসেল বাঁচতে চায়

অরিন্দম মাহমুদ, ধামইরহাট (নওগাঁ)
 | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২০, ১৪:১৮

ষোল বছরের কিশোর রাসেল লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত। এক বছর ধরে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরেও রোগমুক্তি হয়নি তার। ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের জন্য সব জমি-জমা বিক্রি করে এখন নি:স্ব নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ২ নং ওয়ার্ড পিড়লডাঙ্গা গ্রামের এমরান হোসেন। যে কারণে ছেলের পরবর্তী চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি।

জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে হঠাৎ পেটে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব হলে জয়পুরহাটে পদ্মা ল্যাবে ভর্তি করা হয় রাসেলকে। সেখানে চিকিৎসক বলেন, তার লিভারে পানি জমেছে। চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধে কোন কাজ না হওয়ায় কিছুদিন পর লিভারে জমে থাকা পানি অপারেশনের তাকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়। এরপর চিকিৎসক বোর্ড বসিয়ে বিভিন্ন পরিক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বলেন, লিভারে অতিরিক্ত চর্বির সাথে রক্ত জমেছে। অপারেশন করতে হবে, অনেক টাকা লাগবে। চিকিৎসকের কথামতো অতিরিক্ত চর্বি ও কিছু রক্ত বের করার কিছুদিন পরও কোন উন্নতি না হওয়ায় ছেলেকে এমরান হোসেন ফিরে আসেন বাড়ি। কিছুদিন পর রাসেলকে নিয়ে আবার ছুটে যান বগুড়া পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে চিকিৎসক অপারগতা প্রকাশ করলে শেষবারের মতো ঘরে থাকা কিছু ধান, চাল, বর্তমান বাজার মূল্য ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার শখের একমাত্র গাভী মাত্র ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ছেলেকে নিয়ে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল হসপিটালে ভর্তি হন। সেখানে রাসেলকে পরীক্ষা করে চিকিৎসক বলেন, অপারেশনের জন্য ৩ লাখ টাকা লাগবে। এক বছর ধরে ছেলেকে নিয়ে এখানে সেখানে ঘুরতে ঘুরতে এমরান হোসেন এখন নিঃস্ব। তাই ছেলের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য অর্থের খোঁজে বাবা-মা পাগলের মত ছুটছেন এর ওর বাড়ি। রাসেলের রোগমুক্তির জন্য এভাবে অসহায়ের মত ছুটতে ছুটতে তার পরিবার এখন ক্লান্ত। অন্যদিকে অর্থের অভাবে টিন না থাকায় এমরান হোসেনের ঘরের বারান্দা মাটির প্রাচীর বর্ষার পানি পরে ভেঙ্গে যেতে দেখা গেছে।

অসুস্থ রাসেল মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘মা প্রধানমন্ত্রীকে বলো, তিনিত মায়ের মতো। তিনি আমার জন্য কিছু একটা করুক, আমি বাঁচতে চাই। লেখা পড়া করে বড় হতে চাই।’

ছেলের এমন হৃদয় বিদারক আকুতিতে মা কহিনুর বেগম বিচলিত হয়ে বলেন, ‘আমার ছলটাকে বাঁচান ভাই। শরীরের সব রক্ত বেঁচে দিমো তাও ছলটা ভালো হক। ডাক্তারোক টাকা দিতে দিতে ফকির হয়ে গেছি।’

পিতা এমরান হোসেন বলেন, ‘ছলটার পিছনে সব টাকা শেষ করেছি ভাই, জমিজমা, গরু-বাছুর সব শেষ। তাও ছলটা ভালো হলোনা। ডাক্তার বলিছে ৫ লাখ টাকা দিলে ছলটার চিকিৎসা হবে, এতো টাকা কোটে পামো। প্রধানমন্ত্রী যদি এনা দয়ার দৃষ্টিতে তাকালো হিনি তাহলে ছলটা মোর বাঁচলো হিনি।’

ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :