ছাড়পত্র না নিয়েই ফসলি জমিতে ইটভাটা

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২০, ২০:৫৪

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়েই রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় তিন ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি ইটভাটা। উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের পূরাপাড়া গ্রামে নির্মিতব্য এই ইটভাটার বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন কৃষকরা। গত দুই মাস আগে তারা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। তবে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে আবদুর রাজ্জাক নামে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক ব্যবসায়ী এই ইটভাটা করছেন। বর্তমানে গোদাগাড়ীর জামাদান্নি এলাকায় ‘মেসার্স বিবিএফ ব্রিকস’ নামে রাজ্জাকের একটি ইটভাটা আছে। তবে স্থানীয়দের চরম বিরোধিতায় সেখানে আর ভাটা চালাতে পারছেন না তিনি। তাই সেই ভাটাটিই সরিয়ে পূরাপাড়ায় আনা হচ্ছে।

কৃষকদের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পুরাপাড়া মৌজায় তাদের সবার ফসলি জমি রয়েছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ থাকায় তাদের জমিতে বছরে তিনবার ধান চাষ করা সম্ভব হয়। জমির আশপাশে রয়েছে আম ও পেয়ারা বাগান। পাশেই পুরাপাড়া গ্রাম ঘেঁষে তাদের ফসলি জমির পাশে এই ইটভাটা স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে সেখানে কয়েকটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ইটভাটার জন্য আবদুর রাজ্জাক কিছু জমির মালিককে মোটা অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জমি ইজারা নিয়েছেন। আরও জমি নেওয়ার প্রচেষ্টা করছেন।

কৃষকরা জানান, পূরাপাড়ায় ইটভাটা নির্মাণ করলে তাদের তিন ফসলি জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলন কমবে। এতে পরিবার নিয়ে মারাত্মক দুর্ভোগের মধ্যে পড়বেন তারা। এছাড়া ইটভাটার কারণে আম এবং পেয়ারা বাগানও নষ্ট হয়ে যাবে। তাছাড়া পরিবেশের বিপর্যয় ঘটবে। এতে গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যহানি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তাই তারা এই ইটভাটা নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনির হোসেন জানান, আবদুর রাজ্জাক ভাটা করছেন কিন্তু অবস্থানগত ছাড়পত্রের জন্যই আবেদন করেননি। তাই পরিবেশের ছাড়পত্রও নেই। এসব ছাড়া তো ভাটা হতে পারে না। সেটা অবৈধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আবদুর রাজ্জাককে ডাকা হলেও তিনি আসেননি বলে জানান এই উপ-পরিচালক।

তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। কোথাও পরিবেশের বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকলে সেটা প্রাথমিকভাবে তারই দেখা উচিত।

এ বিষয়ে ইউএনও আলমগীর হোসেন জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাষিদের আপত্তি থাকলে ইটভাটা হবে না।

কৃষি আর পরিবেশের ক্ষতি কোনভাবেই করতে দেয়া হবে না উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল জানান, তিনি কয়েকদিন আগেই রাজশাহীতে যোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি তারও জানা নেই। তবে তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) সঙ্গে কথা বলে দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

ইটভাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘কাগজপত্র ঠিক করা হচ্ছে। তারপর আবেদন করা হবে।’

ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই নির্মাণ কাজ শুরু কেন জানতে চাইলে ব্যস্ততার দেখিয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।

ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :