বন্যায় গো-খাদ্যের সংকট, বিপাকে জামালপুরের খামারীরা

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২০, ১৩:৫৭

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর

গবাদি পশুর খাবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন জামালপুরের বন্যাকবলিত কৃষক ও খামারীরা। বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় নিজেদের খাবারের পাশপাশি গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। খামারীরা তাদের গবাদি পশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যায় গো-খাদ্যের সংকট মোকাবিলায় খড় প্রক্রিয়াজাত করে গবাদি পশুকে খাওয়ানোর জন্য তাদের ভ্যাটেনারি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করছে।

জামালপুরের মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষক ও গো-মহিষের খামারিরা গরু লালন-পালন করে কোরবানী ঈদে তা বিক্রি করে দু’পয়সা আয় করে থাকেন। কিন্তু এবার বর্ষার শুরুতেই বন্যা দেখা দেওয়ায় এসব গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। গত এক সপ্তাহের বন্যায় জেলার সাত উপজেলার দেড় লাখ পরিবার ও খামারের  তিন লাখ গবাদি পশু পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কৃষকরা এসব তাদের গবাদি পশু বিভিন্ন সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্টসহ উঁচু জায়গায় রেখে রক্ষার চেষ্টা করছেন। বন্যায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মহিষ পালনকারীরা। তারা পালের মহিষকে রক্ষা করতে নিজ এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুরী গ্রামের পশ্চিম পাড়া এলাকার সাজু মিয়া জানান, বন্যায় মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় তার পালের ৪৫টি মহিষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। বন্যার আগে তার মহিষগুলোর স্বাস্থ্য ভালো থাকলেও এখন দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে কোরবানির বাজারে লোকসানের মুখে পড়বেন তিনি। এখন তারা মহিষের পাল নিয়ে মাদারগঞ্জ থেকে শেরপুর জেলার শুকনো জায়গায় যাচ্ছেন। 

জেলার ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউনিয়নের চিনাডুলি গ্রামের কৃষক সেলিম আব্বাস বলেন, ‘বন্যার পানি বাড়ি-ঘরে আসায় আমরা রাস্তায় আশ্রয় নিছি। কিন্তু গরু বাছুররে কোনো খাদ্য দিতে পারছি না। খাদ্যের অভাবে গরু ছাগলগুলো শুকায় যাচ্ছে।’

একই এলাকার খামারি আব্দুস সালাম বলেন, ‘আট বিঘা জমিতে তিনি ঘাস বুনেছিলেন। সব ঘাস বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন গরুকে খাওয়ানোর মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। বন্যা দীর্ঘদিন থাকলে এতদিন বাজার থেকে দানাদার খাবার কিনে খাওয়ানো সম্ভব না। তাই তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা উকিল উদ্দিন জানান, বন্যা পরিস্থিতিতে কৃষকদের খড় সংগ্রহের পরামর্শ দেয়ার পাশপাশি খড় প্রক্রিয়াজাত করে পশুকে খাওয়ানোর জন্য ভ্যাটানারি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। এসব পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/পিএল