সাহেদকে সীমান্ত পার করতে ৫০ লাখে রফা হয়েছিল আলফার

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২০, ১৪:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমকে ভারতে পার করে দিতে ৫০ লাখ টাকায় রফা করেছিলেন আশ্রয়দাতা আল ফেরদৌস আলফা। এজন্য নিজের মাছের ঘেরে সুসজ্জিত এসি ঘরে চার দিন সাহেদকে রেখেছিলেন তিনি। এর মধ্যেই আলফা ব্যবস্থা করেছেন নৌকা ও মাঝি।

পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের হাতে সাহেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্রের মাধ্যমে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ৫৬ মাললার আসামি প্রতারক সাহেদ করিম ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ভারতে পার করে দিতে আল ফেরদৌস আলফার সঙ্গে ৫০ লাখ টাকায় চুক্তি করেন প্রতারক সাহেদ। সে হিসেবে সাহেদকে আলফা সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা শাকরা কোমরপুরে তার মাছের ঘেরে আশ্রয় দেয় আলফা। সেখানে এসি ঘরে চার দিনের মতো ছিলেন রিজেন্টের চেয়ারম্যান। এই সময়ের মধ্যে সাহেদকে ভারতে পালিয়ে যেতে নৌকা ও মাঝির ব্যবস্থা করেন আলফা।

আল ফেরদৌস আলফা সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র মতে, ওই অঞ্চলে তিনি একজন কুখ্যাত চোরাকারবারি বলে পরিচিত। কিছুদিন আগেও তিনি চোরাচালান মামলায় জেলে ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে আলফা’র ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কিছুক্ষণ তা ব্যস্ত এবং পরবর্তীতে বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে আল ফেরদাউস আলফার অতীত ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি এক সময় কুলির কাজ করতেন। এরপর জড়িয়ে পরেন অবৈধ চোরাচালানে। কুলি থেকে বর্তমানে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক আলফা। রয়েছে একাধিক বিলাশবহুল বাড়ি, দামি গাড়ি এবং দেহরক্ষী।

স্থানীয়ভাবে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত আলফা মাদক মামলায় ইতোপূর্বে সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলেও গেছেন। পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে জামিনে বেরিয়ে পুনরায় চোরাচালানের রাজত্ব কায়েম করেন। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বিজিবি’র হাবিলদার মো. মোহসীন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় আলফার বিরুদ্ধে একটি চোরাচালান মামলা করেছিলেন। সে মামলায় গ্রেপ্তারও হয়েছিল আল ফেরদৌস আলফা।

আলফা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকাভুক্ত হুন্ডি ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী। তারপরেও বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য পদে রয়েছেন।

সূত্র জানায়, আলফার ভাই আব্দুল আলিম সাতক্ষীরা চাঞ্চল্যকর বিজিবি সদস্য আব্দুল জব্বার হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে মামলাটি করেন ভোমরা বিজিবির নায়েক মো. নাসির উদ্দীন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/কারই/এমআর