সিরাজগঞ্জে বিপদসীমার ৯৪ সেমি ওপর যমুনা

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
| আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২০, ২২:৫২ | প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২০, ২২:৫১

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বর্ষার অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। ফলে অবনতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। পানি বৃদ্ধির কারণে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ।

আজ সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ডপয়েন্ট এলাকায় পানি ৩৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৮ ও কাজিপুর উপজেলা পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জেলার বন্যার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানি বাড়ার কারণে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ফসল। পানিবন্দি অনেক মানুষ বাঁধ ও উঁচু স্থানে ঝুপড়ি ঘর তুলে অবস্থান নিয়েছেন।

পানি বাড়ায় নদী-তীরবর্তী কাজিপুর উপজেলার ক্ষুদবান্ধি, সিংড়াবাড়ি ও শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরীতে ব্যাপক ঘূর্ণাবর্তের কারণে ভাঙ্গন বেড়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছে বন্যাকবলিত জেলার কাজিপুর, বেলকুচি, সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার দেড় লাখ মানুষ।

এদিকে, সদর উপজেলার শিমলায় পাউবোর ক্ষতিগ্রস্ত ‘শিমলা স্পার’টির আরো প্রায় ৫০ মিটার পাকা কংক্রিট অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় এক মাসের ব্যবধানে তিনবার ধসে পড়ল স্পারটি। ৫০ মিটার মাটির ও ৫০ মিটার পাকা কংক্রিট অংশসহ ঘূর্ণাবর্তের কারণে ১০০ মিটার নদীতে চলে যায়। পানির মধ্যে বাকি ৫০ মিটার অবকাঠামো দাঁড়িয়ে আছে।

জেলার প্রায় ৮০ কিলোমিটার নদীতীর রক্ষা বাঁধে ভাঙ্গনের ঝুঁকি ঠেকাতে ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে সদর, কাজীপুর ও এনায়েতপুরে ১১টি স্পার ও গ্রোয়েন নির্মাণ করা হয়। সময় মতো রক্ষণাবেক্ষণ না করায় অধিকাংশই ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ওই সব অবকাঠামোর মধ্যে শিমলা স্পারটির পাশে ব্যাপক ঘূর্ণাবর্তের কারণে এ দশা হয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজিপুর, সদর ও শাহজাদপুরের কয়েকটি স্থানে নতুন করে ভাঙ্গনও বেড়েছে।

বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রয়েছে, ২৪০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও এক হাজার ৬৮০টি ঘরবাড়ি আংশিক, তিন হাজার ৫৫০ হেক্টর ফসলি জমি, ৩০টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ও পাঁচটি আংশিক, ৩ কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধ সম্পূর্ণ এবং ৭ কিলোমিটার আংশিক, তিনটি ব্রিজ ও কালভার্ট সম্পূর্ণ ও সাতটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৩৫টি ইউনিয়নের ২৪০টি গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার পরিবারের এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুুর রহিম জানান, বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৬৭ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২৫৮ টন জিআর চাল, সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ ও শিশুখাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা এবং ৩০ হাজার শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :