'সাহেদের মাথায় ক্রিমিনাল বুদ্ধি গিজগিজ করে'
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার মামলায় গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম অন্য সব অপরাধীর মতো নন। তার মাথায় ক্রিমিনাল বুদ্ধি গিজগিজ করে বলে জানাচ্ছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্য, কর্মজীবনে অনেক ধরনের প্রতারক ও অপরাধীকে সামলেছেন। কিন্তু সাহেদের মতো এত ধূর্ত লোক দেখেননি। সব বিষয় নিয়েই নিজের মতো করে যুক্তি দেন সাহেদ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাহেদের ব্যাপারে এমন মন্তব্য তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল গাফফার জানান, জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর আবার দেখা হলে জীবনের অনেক কাহিনি শোনাবেন বলে জানিয়েছেন সাহেদ। তিনি বলেন, সাহেদ বলেছেন, 'স্যার, আপনার সঙ্গে আবার দেখা হবে। হয়তো আপনি তখন আরও বড় পদে থাকবেন। তখন অনেক গল্প বলব।'
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর শত শত প্রতারিত লোক র্যাবের কাছে আসছেন। তারা প্রতিকার চান। সাহেদ অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন তারা আইনি সহায়তা চাইছেন।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিজের অপকর্ম ঢাকতে সাহেদ যুক্তি দেন- কতজনই তো অবৈধ কাজ করে খাচ্ছে। তার কাজ নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছিলেন তিনি। তবে চিকিৎসার নামে অনৈতিক বাণিজ্যের সঙ্গে কর্মীদের জড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। যদিও তদন্তে জানা গেছে, সব অপকর্মের পরিকল্পনা সাহেদের মাথা থেকেই এসেছিল।
সূত্র আরও জানায়, বিএনপির একজন নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা সাহেদ স্বীকার করেছেন। পরে আওয়ামী লীগের অনেকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা জানান। রাজনীতিক নেতা হয়ে ওঠার বড় স্বপ্ন ছিল তার।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সাহেদের অবৈধ অর্থের অনুসন্ধান চলছে। বিদেশে টাকা পাচার করেছেন কিনা, তা নিয়েও চলছে অনুসন্ধান। সাহেদের স্ত্রী, বিশ্বস্ত কর্মী ও আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনের নামে-বেনামে থাকা ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্রসহ সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঢাকাটাইমস/১৮ জুলাই/এএ/ইএস