টেলিভিশন না থাকায় ক্লাস বঞ্চিত ১২ হাজার শিক্ষার্থী

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০২০, ১৬:০০ | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০, ১৬:১৬

বিভাষ দাস, ঢাকাটাইমস

বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১২০০০ শিক্ষার্থী পাচ্ছে না ক্লাস করার সুযোগ। বাড়িতে বিদ্যুৎ ও টেলিভিশন না-থাকায় প্রযুক্তি নির্ভর অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস করতে না পেরে কোমলমতি শিশুরা পড়াশোনা বিমুখ হয়ে উঠছে। ভবিষ্যৎ।

করোনা সংক্রমণ রোধে ১৭ মার্চ দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। সেই নির্দেশনা ১৮ মার্চ থেকে কার্যকর হয়। এরপর দেশে করোনা রোগী বাড়তে থাকায় এ বন্ধের মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। পরবর্তীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ২৯ মার্চ থেকে সংসদ টেলিভিশনে ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ স্নোগান নিয়ে অনলাইন ক্লাস চালু হয়।

উপজেলার খড়মখালী গ্রামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দিনমজুর তপন বসু বলেন, ‘সরকারের অনলাইন ও টিভিতে ক্লাসের উদ্যোগ ভাল হইছে। তবে আমার বাড়ি টিভিই নাই। আমি বাটন মোবাইল ব্যবহার করি। আমার মেয়ে তো ক্লাস করার সুযোগ পায় না। আর টিভি ওয়ালা করো বাড়ি গেলে তারা ক্লাস দেখার সুযোগ দেয় না। দেশে আমার মতো বহু গরিব মানুষ আছে যাদের ঘরে টিভি নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার গরীবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্র বলে, ‘আমাদের বাড়ি কারেন্ট নাই, টিভিও নাই। স্কুল বন্ধের পর আমি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াই আর নদীতে স্নান করি। আমাদের বাড়ি একটা টিভি থাকলে আমিও ক্লাস করতাম।’

চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এখানকার প্রায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের বাড়িতে টেলিভিশন নেই। এ উপজেলায় ১১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ১৮০০০ শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের পাঠদানের জন্য রয়েছেন প্রায় ছয় শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা। বর্তমানে ছয় হাজারের মতো শিক্ষার্থী অ্যাড্রয়েড মোবাইল ফোন ও টেলিভিশনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস করছে বা দেখছে। বাকিদের কথা বিবেচনা করে আমরা ‘ঘরে বসে শিখি প্রাথমিক শিক্ষা বাগেরহাট’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলেছি। সেখানে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাসের ভিডিও আপলোড করছি। যেসব অভিভাবকদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল নেই তাদের ওই ভিডিও মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে দেবার চেষ্টা করছি। যেগুলো নরমাল মোবাইলেও দেখা যাবে। যা অনলাইনের ক্লাস বঞ্চিত ওইসব ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকটা উপকারে আসবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৯জুলাই/পিএল)