কুড়িগ্রামে দুর্ভোগে বানভাসীরা, মিলছে না প্রয়োজনীয় ত্রাণ
কুড়িগ্রামে দীর্ঘ ২৬ দিন ধরে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা অববাহিকার রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী, উলিপুর, কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী ও ফুলবাড়ী উপজেলার প্রায় তিন শতাধিক চরাঞ্চলের তিন লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তীব্র হয়ে উঠছে খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো খাদ্যের সংকট। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে পানি বাহিত নানা রোগ।
এ অবস্থায় বন্যাদুর্গত এসব এলাকায় বড় নৌকা দেখলেই ত্রাণের আশায় ছুটোছুটি করছে দুর্গতরা। প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ তাদের।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মশালের চরের সাজেদা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নৌকার মধ্যে খেয়ে না খেয়ে বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পাইনি। পানিতে থাকতে থাকতে হাতে পায়ে ঘা হয়ে গেছে। আবার খাবার পানি নাই।’
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, সরকারি যে ত্রাণ পেয়েছি তা সকল বন্যাকবলিত পরিবারকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। বন্যাকবলিতরা খুবই দু:খ-কষ্টে দিন পার করছে। তাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন।
জানা গেছে, সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ১৭০ মেট্রিক টন চাল, জিআর ক্যাশ নয় লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য দুই লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান বিতরণ করলেও বেশির ভাগ বানভাসী মানুষের ভাগ্যে জুটছে তা না।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, ত্রাণের পাশাপাশি চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে জেলার ৪ লাখ ২৮৫২৫ পরিবারকে ভিজিএফ’র ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে।
এদিকে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানির তোড়ে রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট এলাকার ক্রস বাঁধটি ধসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বালির বস্তা ফেলে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/পিএল)