ভুল চিকিৎসায় স্কুলছাত্রের পা হারানোর অভিযোগ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০২০, ২৩:০৭

ভুল চিকিৎসায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় হৃদয় হোসেন (১৫) নামে এক স্কুলছাত্র পা হারাতে চলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের উত্তর গোলাইডাঙ্গা বাজারের চিকিৎসক আল-আমিনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় ওই তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

ভুক্তভোগী হৃদয় উপজেলার জামসা ইউনিয়নের বাস্তা গ্রামের প্রবাসী নূর মোহাম্মদের ছেলে। সে গোলাইডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, গত ৩০ জুন সেচ কাজে ব্যবহৃত ১০ কেভি ট্রান্সফর্মার ক্ষেত থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে গিয়ে ডান পায়ের গোড়ালীতে আঘাত পায় হৃদয়। পরে তাকে স্থানীয় ব্যারিস্টার আশফাক মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর ঢাকা নেওয়ার প্রস্তুতিকালে গোলাইডাঙ্গা বাজারের পল্লী চিকিৎসক আল-আমিন হৃদয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। এসময় তাকে ব্লেড দিয়ে অপারেশন শেষে প্লাস্টার করে প্রেসক্রিপশন দেন। এরপর কয়েকদিন যেতেই ক্ষতস্থানে পচন ধরে এবং তার পায়ের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। গত ১৩ জুলাই হৃদয়কে সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট সার্জারি আশরাফুল কবিরের মানিকগঞ্জ ইউনাইটেড হসপিটালের প্রাইভেট চেম্বারে নেওয়া হয়।

তাদের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসার কারণে পুনরায় হৃদয়ের অপারেশনে মোটা অংকের টাকা ব্যয় হয়েছে। তার পরেও ক্ষত স্থানের কাটা রগ ভাল হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক। এদিকে তিন মাসের মধ্যে রোগীর পায়ের অবস্থা ভালো না হলে উন্নতর চিকিৎসার জন্য দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানান চিকিৎসক আশরাফুল কবির।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত চিকিৎসক আল-আমিন পার্শ্ববর্তী বলধারা ইউনিয়নের উত্তর গোলাইডাঙ্গা গ্রামের নুরউদ্দিন পাদ্রীর ছেলে। স্থানীয় গোলাইডাঙ্গা বাজারে ‘মা ফার্মেসী’ নামে একটি ওষুধের দোকান রয়েছে তার। ফার্মেসির সাইনবোর্ড ও প্রেসক্রিপশন প্যাডে নিজের নামের আগে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে শিশু, মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনিতে বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত হিসেবে নিজেকে জাহির করেছেন তিনি। অথচ তার প্রশিক্ষণ সনদ তো দূরের কথা ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্সটি পর্যন্ত নেই বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক ভুল চিকিৎসার অভিযোগ রয়েছে।

হৃদয়ের চাচাত ভাই বাবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ভুল চিকিৎসা দিয়ে যে ক্ষতি করেছে, বিষয়টি স্থানীয় দুই ইউপি মেম্বার ও বাজার কমিটিকে জানিয়েছি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গোলাইডাঙ্গা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন বলেন, ‘চিকিৎসক আল-আমিন কাজটি অন্যায় করেছে। ওর তো ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রিরই অনুমতি নেই। তারপরও কিভাবে এ ধরনের চিকিৎসা করে আমার জানা নেই। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পক্ষ আমার কাছে এসেছিল, আমি তাদের ইউপি মেম্বারের কাছে পাঠিয়েছি।’

তবে অভিযুক্ত আল-আমিন ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, ‘হৃদয়ের পরিবারকে বলা হয়েছে, তার চিকিৎসার ব্যয়ভার আমি বহন করব।’

কিন্তু বিশেষ ট্রেনিংপ্রাপ্ত বিষয়গুলোর সনদ আছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। এছাড়া ড্রাগ লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী মোল্লাহ বলেন, ‘এ ধরনের চিকিৎসা করার এখতিয়ার তার নেই। পায়ের গোড়ালির ওপরে ‘টেনডেন’ একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। তিন মাসের মধ্যে যদি কাটা স্থান জোড়া না লাগে তাহলে অবস্থার অবনতি হবে। এতে হাঁটা চলাচলে অসুবিধা হবে ছেলেটির। এ ধরনের চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :