ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছয় মাসে ৩৮ সংঘর্ষে ২৬ খুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ জুলাই ২০২০, ১১:৫৪ | প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০২০, ১১:০৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ছয় মাসে ৩৮টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় ১৯ পুলিশসহ সহস্রাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় পুলিশের এক সদস্যসহ ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি। এই কয়েক মাসে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় ২১টি মামলা হয়েছে। খুনের ঘটনায় হয়েছে ২৬টি মামলা। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ১৭১ জন ও খুনের ঘটনায় ৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়াও সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোককে গ্রেপ্তার করা হয়।

৩৮টি সংঘর্ষের মধ্যে সরাইল উপজেলায় ১৭টি, নবীনগর উপজেলায় তিনটি, সদর উপজেলায় তিনটি, নাসিরনগর উপজেলায় ৫টি, বিজয়নগর উপজেলায় চারটি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় দুটি, আশুগঞ্জ উপজেলায় দুটি ও কসবা উপজেলায় দুটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে গত ৫ এপ্রিল সরাইল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৭টি ও সদর উপজেলার ভাদুঘর গ্রামে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, জমি নিয়ে বিরোধ, নির্বাচনী বিরোধ, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ, রাস্তা নিয়ে বিরোধ, পুকুরে মাছ ধরা, ধানের উপর দিয়ে ট্রাক্টর যাওয়া, এক বাড়ির হাঁস আরেক বাড়িতে যাওয়া, কথা কাটাকাটিসহ বিভিন্ন ছোটোখাটো ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসব সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটার পাশাপাশি টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ছুড়েছে। এসব ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতিসহ শতাধিক লোককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

৩৮টি সংঘর্ষের ঘটনার মধ্যে দেশব্যাপী আলোচিত ছিল গত ১২ এপ্রিল নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে মোবারক মিয়া (৩৫) নামক এক যুবকের পা কেটে প্রতিপক্ষের লোকদের “জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে এলাকায় উল্লাস করা। সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই আসামি ধরতে গিয়ে আসামির ছুরিকাঘাতে সদর থানার এএসআই আমির হোসেন নিহত হয়েছেন।

এসব সংঘর্ষের মধ্যে ৮ জুলাই সকালে সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার গ্রামের বজলু মিয়ার গোষ্ঠীর এবং ওলি মিয়ার গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এর আগে ৭ জুলাই রাতে এই দুই গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়।

গত ২ জুন ধান মাড়াইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাসিরনগর উপজেলার সূচিউড়া গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে চার পুলিশসহ উভয়পক্ষের ৬৫জন আহত হন।

গত ২৯ মে সকালে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলার খাটিহাতা ও সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।

গত ২২ জুন সকালে রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শোলাবাড়ি গ্রামের দানা মিয়ার গোষ্ঠী ও মলাই মিয়ার গোষ্ঠীর লোকদের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে সাতটি বাড়ি ভাঙচুর করে দাঙ্গাবাজরা।

গত ১৩ মে রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বাগানবাড়ি ও হালদারপাড়ার যুবকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পৌর ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ২২ যুবককে গ্রেপ্তার করে।

গত ৪ মে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারি ছুটি ঘোষণার পর গত ২৬ মার্চ থেকে গত ৪ মে পর্যন্ত এক মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কমপক্ষে ২১টিরও বেশি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

২৯ এপ্রিল সকালে সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার গ্রামে মসজিদে যাওয়া নিয়ে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশত লোক আহত হন।

গত ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় শিশু কন্যা ফারিয়া নিহত হন।

২৬ এপ্রিল বিজয়নগর উপজেলার আদমপুরে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩৫জন আহত হন।

গত ১৯ এপ্রিল রাতে ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে নাসিরনগর উপজেলার জেঠাগ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৬ পুলিশ সদস্যসহ ৬৫ জন আহত হয়।

গত ১৪ এপ্রিল রাতে নাসিরনগর উপজেলার বড়নগর গ্রামের বাজারে ঝালমুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় বড়নগর গ্রামের ইউছুফ আলীর ছেলে রজব আলী-(২০) আহত হন। পরদিন সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

গত ১২ এপ্রিল নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আবু কাউছার মোল্লার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩৫ জন আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে জিল্লুর রহমানের সমর্থক মোবারক মিয়ার পা কেটে ‘জয় বাংলা’ বলে শ্লোগান দেয় কাউছার মোল্লার সমর্থকরা। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবারক মিয়া মারা যান। এ ঘটনায় জিল্লুর রহমান ও কাউছার মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

একই দিনে সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আঁখিতারা গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হন।

১১ এপ্রিল পূর্ব বিরোধের জের ধরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হন।

গত ১০ এপ্রিল কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামের মন মিয়া চৌধুরীর ছেলে মো. ফারুক মিয়া চৌধুরী প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন। ১৪ এপ্রিল বিকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

গত ৫ এপ্রিলে সরাইল উপজেলার টিঘর, বড়ইছড়া, বিটঘর, নোয়াগাঁও, ধরন্তি ও সৈয়দটুলা গ্রামে ৭টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক লোক আহত হন। ওই দিন বিকালে মার্বেল খেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হন।

গত ৪ এপ্রিল সকালে পূর্ব বিরোধের জের ধরে কসবা উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে খুন হন বাহাদুরপুর গ্রামের মো. সলিমুল্লাহ’র ছেলে মো. তানভীর (২২)।

৩ এপ্রিল রাতে নাসিরনগর উপজেলার কদমতলী গ্রামে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন কদমতলী গ্রামের সোলেমান মিয়ার ছেলে ও গোয়ালনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার মোস্তফা কামাল ওরফে মস্তু মিয়া।

গত ৩১ মার্চ সরাইল উপজেলার ভুঁইশ্বর গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন।

২৭ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার চর-চারতলা ইউনিয়নের একটি পোড়া গুদামে জুয়ার আসরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন মো. জাহাঙ্গীর আলম।

পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ২৬ মার্চ বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হন।

গত ১৬ মার্চ সরাইল উপজেলার বারইজীবীপাড়া ও সূর্যকান্দি গ্রামের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৪০ জন আহত হন।

গত ১৩ মার্চ সরাইল উপজেলার পরমান্দপুর গ্রামে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩০ জন আহত ও একজন নিহত হন।

২৭ ফেব্রুয়ারি বাঞ্চারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হন।

১১ ফেব্রয়ারি নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ১০জন আহত হন।

১১ জানুয়ারি আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হন। এর আগের দিন বিকালে দুর্গাপুর গ্রামে দুই প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন।

৬ জানুয়ারি বিজয়নগর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শতাধিক লোক আহত হন।

২ জানুয়ারি সরাইল উপজেলা সদরে রকেট মেম্বার ও শাহআলম মেম্বারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়। একই দিনে সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হন।

১ জানুয়ারি নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সানি নামে এক যুবক নিহত হন।

এ ব্যাপারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহ্বায়ক আবদুন নূর বলেন, গ্রামে সংঘর্ষ লাগিয়ে রাখা এক শ্রেণির সর্দারের ব্যবসা। তারা নিজেদের স্বার্থে গ্রামে দাঙ্গা-ফ্যাসাদ লাগিয়ে রাখে। এই বিষয়টি সাধারণ মানুষকে বুঝাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেন, এলাকার মানুষের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন না ঘটাতে পারলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব না। একের পর এক এসব সংঘর্ষের ঘটনা খুবই পীড়াদায়ক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ জেড এম আরিফ হোসেন বলেন, সংঘর্ষ, মারামারি, খুন অত্যন্ত জঘন্য কাজ। এসবের অর্থনৈতিক ফলাফলতো নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি নেতিবাচক। যেকোনো ব্যক্তিই কিন্তু এক একটি অর্থনৈতিক এজেন্ট। মারামারি, সংঘর্ষের ফলে ব্যক্তি ও সমাজে যে অস্থিতিশীলতা ও মানসিক চাপ তৈরি হয় তা সুষ্ঠুভাবে অর্থনৈতিক কর্মকা- পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সুষ্ঠু সামাজিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যেকোনো উপায়ে সংঘর্ষের পথ পরিহার করে সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো সমুন্নত রাখতে হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, নতুন করে আর যাতে কোন সংঘর্ষ না হয় সেজন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের পুলিশি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের সোর্সরা খোঁজখবর রাখছে। এছাড়াও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আগের মতো সংঘর্ষ এখন আর নেই। সংঘর্ষ যাতে না হয় সেজন্য আমরা প্রতিটি এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে সচেতন করছি। জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এলাকায় যাতে ঝগড়া না হয় সেজন্য কাজ করছি।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঈদুল আজহার আগে ও পরে যাতে কোন এলাকায় সংঘর্ষ না হয় সেজন্য আমরা তৎপরতা চালাচ্ছি। সংঘর্ষের ঘটনায় যেসব মামলা হয়েছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এসব মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করছি। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :