সুবিধার মুনাফা ভাগাভাগি ও গরিবের পেটে লাথি

কামরুল হাসান
 | প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০২০, ১২:১১

বেসরকারি ইউনিভার্সিটির এক মেয়ে স্বনির্ভর হওয়ার আশায় ধানমণ্ডি পার্কে বাদাম বেচা শুরু করে। সে খবর পত্রিকায় প্রকাশের পর, ভাভাগো ভাভা, জগতের কোনো কাজই ছোট না, পরিশ্রমই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি, নারীরাই পারে ইত্যাদি হুক্কাহুয়া আর মাতমে ফেসবুকে টেকা দায় হয়ে পড়েছিল।

আমি তখন স্ট্যাটাস দিসিলাম, 'এ মেয়ে সদরঘাট বা সায়েদাবাদ স্টেশনে যায়া বাদাম বেচে না ক্যারে, ওখানে তো কাস্টমার বেশি।' কিন্তু না, তুলনামুলক নিরাপদ ধানমণ্ডির মনোরম পরিবেশে, লক্ষ্মী ভায়া আর চুইট আপ্পিদের কাছেই ওই মেয়ে ভড়ং করবে।

তো, বাদাম বেচা ওই মেয়ের লেটেস্ট খবর কী? বাদামের ইণ্ডাস্ট্রি দিতে পারসে? নাকি গরীব যারা ধানমণ্ডি পার্কে বাদাম বেচে কিছু টাকা ঘরে নিতো, তাগো হোগা মেরে মালয়েশিয়া ভাগসে? (পত্রিকায় প্রকাশ, মেয়ের বাবার মালয়েশিয়ায় সেকেণ্ড হোম করার কথা চলছিল।)

আরেকদিন দেখলাম, কোন একজন শিক্ষিত তরুণ, 'কাজই মহান, তা যা-ই হোক' এ তন্ত্রমন্ত্র জাতিকে শেখানোর জন্য ভ্যানগাড়িতে খেলনা বেচা শুরু করেছে। তারও খবর পাচ্ছি না এখন আর।

এই যে কিছু করে দেখানোর বিষয়টা যে মাথায় আসে, তাতে গরীবের হোগা মারার উপায়টা নিহিত কেন থাকে?

এই যে প্রাঙ্গণে মোর নাট্যদল তাদের অফিস খরচ তোলার জন্য, শাকসবজি বেচতে নগরীর ৫টা পয়েন্টে ভ্যান নিয়া খাড়ায়া গেল, অথচ যেসব গরীব এই ভ্যানগাড়িতে করে ওইসব পয়েন্টে বা অন্য কোথাও শাকসব্জী বেচতো তাদের কী হবে?

মামুনূর রশীদের সাথে সেলফি তোলার জন্য নগরীর সকল পয়েন্ট থেকে লোকজন চলে আসবে এক পয়েন্টে। প্রতিদিন হয়তো সেলিব্রেটিরা সব্জী বেচবেন না কিন্তু ব্যবসা তো ভাগাভাগি হয়ে যাচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতি ভালো হয়ে গেলে প্রাঙ্গণে মোর নাট্যদলের ভ্যান ঘরে ফিরে যাবে, কিন্তু করোনাকালে গরীব ভ্যানওয়ালা সবজি বিক্রেতাদের সাথে মুনাফা ভাগাভাগির হোগা মারা ইতিহাস থেকে যাবে।

লেখক: নির্মাতা ও লেখক

ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :