ডিজিটাল ক্লাস ও মোবাইল অপারেটর
মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো খেজুরে আলাপ দীর্ঘায়িত করার জন্য নানারকম দিবস পালন উপলক্ষে কিংবা নাটক,মুভি এগুলো দেখার জন্য স্বল্পমূল্যে কিংবা ফ্রিতে ইন্টারনেট দেয়।
অথচ এই মহামারিতে অনলাইন ক্লাস করার জন্য ফ্রি ইন্টারনেট দেবে না !
বেশি কিছু না, সরকার ৫০/১০০ টাকায় একটা টেলিটক সিমের সাথে ৩০ দিনের মেয়াদে ১০০ মিনিট আর ৫ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট যদি দিত এই ধান্দাবাজদের অর্থ লালসা ফুটো বেলুনের মত চুপসে যেত !
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমার বড় বোনের তার ক্লাসের ৫৮ টা স্টুডেন্ট এর খোঁজ নিতে হবে। আমি আমার ফোনে ২৫ মিনিট কিনে তাকে দিলাম। ৪/৫ জনের ফোন বন্ধ ছিল। এ কয়েকজন বাদ দিয়ে তার বাকীদের খোঁজ খবর নেয়া শেষ! এবং সেটা আমার কিনে দেয়া ২৫ মিনিটের মধ্যেই। তাও মনে হয় ২/৩ মিনিট এখনও আছে ব্যালেন্সে!! আমি হইলে কমপক্ষে ১০০ মিনিট কিনে তারপর কথা শুরু করতাম!!
সন্ধ্যায় স্যার ফোন দিয়েছিলেন মিটিং কবে ডাকবেন তা নিয়ে কথা বলার জন্য। আমাকে জানালেন, আমি কলিগদের সবাইকে মেসেঞ্জার গ্রুপে জানিয়ে দিলাম।
হঠাৎ করে মনে আসলো রকিব হাসান এর " ভূত থেকে ভূতে " আইডিয়ারর কথাটা। কিশোর পাশার থিওরি অনুযায়ী প্রথমে পাঁচ জনকে ফোন করলে তারা সবাই আরও পাঁচজন করে বন্ধুদের জানালে পঁচিশ জন, এরা আবার পাঁচজনকে জানালে. কয়েকঘন্টার মধ্যেই পুরো শহর খবর পেয়ে যাবে!
জুকার সাহেব হয়তো কোনক্রমে একটা "তিন গোয়েন্দা " বই পড়ে ফেলেছিলেন। সেখান থেকেই তার হয়তো এই " সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং" এর বুদ্ধি মাথায় আসে!
দুঃখজনক বিষয় এটাই যে টাকা খরচ করে বই কেনার কথা খুব কম মানুষই এখন ভাবে। তাই আজিজ মার্কেটে এখন শাড়ী আর ফাস্টফুডের দোকান চলে। আর প্রকাশনা সংস্থাগুলো একটা একটা করে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।
নীলক্ষেত আর চারুকলার রাস্তায় পরে থাকা ধুলিধূসরিত বইগুলো তাই নিছক জড় পদার্থের মত পড়ে থাকে আর হার্ড ডিস্কে জমে থাকা বইয়ের পিডিএফ ফাইলগুলো লাইফবয় এর বিজ্ঞাপনে দেখানো সেই জীবাণুগুলোর মত দাঁত কেলিয়ে হাসে!
লেখক: শিক্ষক
ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/এসকেএস