দুর্গাপুরে হিজড়া বানানো থেকে রক্ষা পেল জুয়েল
প্রকৃতিগতভাবে নারী আর পুরুষের বাইরেও রয়েছে অন্যান্য তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। এদের মধ্যে হিজড়া সম্প্রদায় অন্যতম। ইদানিং স্বাভাবিক হিজড়াদের মধ্যে কিছু অস্বাভাবিক আচরণের হিজড়ার চরিত্রে অভিনয় করিয়ে জোড় করে বানানো হচ্ছে প্রকৃত হিজড়া।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মঙ্গলবার সকালে এমনই এক হিজড়ার আখড়া থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহায়তা রক্ষা পেল জুয়েল।
এ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে যেসব ছেলেদের মধ্যে একটু মেয়েলিপনা স্বভাব দেখা যায়, তাদের জোর করে পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়া বানানো হয়। ওই ছেলেদের হিজড়া বানিয়ে এদের দ্বারা নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। পৌর শহরের চকলেঙ্গরা গ্রামে হিজড়াদের সর্দার মনির হোসেন ওরফে পাখি দীর্ঘদিন এ পেশায় থেকে উপজেলার দূরদুরান্ত এলাকা ঘুরে মেয়েলি স্বভাবের ছেলেদের ফুসলিয়ে আখড়ায় নিয়ে আসে। পরে ট্রেনিং দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রুপে তৈরি করে ময়মনসিংহ, ভৈরব ও কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে থাকে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে আখড়া থেকে গাঁ ঢাকা দেয় হিজড়া সর্দার পাখিসহ আরো কয়েকজন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় আখড়াতে থাকা কয়েকজন প্রকৃত হিজড়া স্বপ্না, লালু ও করিমনের সাথে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের দিন মুজুর আব্দুল সালামের ছেলে জহিরুল ইসলাম জুয়েলকে উদ্ধার করা হয়। জুয়েল বিগত ৩ বছর ধরে হিজড়া সর্দার পাখির পাল্লায় পড়ে বাড়ি ছেড়ে চলে আসে। তার মাথার চুল রাখা হয় মেয়েদের মতো, তাকে নানাভাবে ট্রেনিং দিয়ে তার নাম পাল্টে জুয়েলের পরিবর্তে রাখা হয়েছে জুলেখা। পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান ব্যক্তি ও প্রেসক্লাব সভাপতি নির্মলেন্দু সরকার বাবুল, সাধারণ সম্পাদক তোবারক হোসেন খোকনসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের সহায়তায় জহিরুল ইসলাম জুয়েলকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয়া হয়।
এ নিয়ে দুর্গাপুর থানার ওসিকে বলেন, এ ধরনের একটি চক্র দীর্ঘদিন এলাকার বিভিন্ন স্থানে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ও সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় উদ্ধার হলো জুয়েল। সমাজে এ ধরনের অপরাধমূলক আখড়া ধংসের জন্য পুলিশ সদা জাগ্রত আছে। পুলিশকে এ সকল কাজে সহায়তা করতে সমাজের সব ধরনের মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/এলএ)