কালিয়াকৈরে বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে উজান থেকে বয়ে আসা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলগুলো। হু হু করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। গত কয়েক দিন পানির অব্যাহত বৃদ্ধি। সেই সাথে ভারি বৃষ্টিপাতে দ্রুত প্লাবিত হতে শুরু করেছে নিচু ও চর এলাকাগুলো। তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের বহু মৌসুমী ফসলি জমি ও মৎস খামার। পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে আঞ্চলিক সড়কগুলো।

এদিকে কালিয়াকৈর পয়েন্টে তুরাগ নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর দুই পাড়ে বহু ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি রাস্তা-ঘাট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর, মৌচাক, মধ্যপাড়া, বোয়ালী, আটাবহ, ঢালজোড়া ইউনিয়নের বড়ইবাড়ী, খালপাড়, বোয়ালী, গাবতলী, কুন্দাঘাটা, গোলয়া, রঘুনাথপুর, টালাবহ, চান্দাবহ, বলিয়াদী এলাকাসহ বেশকিছু অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া দ্রুত পানি বৃদ্ধিতে প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে আরও নতুন নতুন গ্রাম ও আঞ্চলিক সড়কগুলো। বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে নানা দুর্ভোগ। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। চলাচলের সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে নৌকাতে চলাচল করছে ওই সব এলাকার পানিবন্দি মানুষ।

বন্যাকবলিত ওই সব এলাকার শতশত বিঘা ফসলি জমি ও মৎস্য খামার তলিয়ে যাওয়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় বহু কৃষক। স্থানীয় মৎস চাষিরা জানিয়েছেন, লক্ষ লক্ষ টাকা পুঁজি খাটিয়ে মাছ চাষ করছি, হঠাৎ করে বন্যার পানি এসে খামার তলিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অনেকেরই বড় ধরনের লোকশনের মুখে পড়তে হবে।

বন্যার পানিতে সবজি, আউশ ধানের মাঠসহ ছয় হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। সেই সাথে শতাধিকেরও বেশি পারিবার সবজি বাগান প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কালিয়াকৈর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার কর।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রবীর কুমার সরকার ঢাকাটাইমসকে জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিতে পারে পানিবাহিত নানা রোগ। এছাড়াও বিষাক্ত সাপ ও পোকা মাকড়ের শিকারও হতে পারে মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্যেগে একটি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করেছি। রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে আমাদের মেডিকেল টিম পৌঁছে যাবে।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী হাফিজুল আমীন ঢাকাটাইমসকে জানান, বন্যার পানিতে কয়েকটি গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে, যার কারণে মানুষের চলাচলে ভোগান্তি রয়েছে। তবে ঘরবাড়ি তলায়নি। আর বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে এখনো পর্যন্ত খাদ্যের অভাব দেখা দেয়নি। তবে প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের জানানো হয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/এলএ)