টকশো ঘোড়া সাহেদের চাবুক কার কার হাতে?

প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০২০, ১৬:৪৯

মাসকাওয়াথ আহসান

সাহেদকে এলিটফোর্সের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই সমাজে সাহেদ কোনো ডাইনোসর নয়। সে একটি টাকার ও খ্যাতির ফাঁপা নেশায় আসক্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা থেকে জন্ম নেওয়া মানসিক রোগী।

একজন মানসিক রোগীর সংবিধান সম্মত অধিকার রয়েছে; মানসিক স্বাস্থ্যের ডাক্তারি সমর্থন পাবার। সাহেদ নয়; অপরাধী এই ক্ষমতালোভী সমাজের সেইসব 'মধ্যরাতের অশ্বারোহী'রা; যাদের হাতে রয়েছে ঘোড় দৌড়ের চাবুক। সাহেদ একটি টকশো ঘোড়া মাত্র।

যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধ তদন্তের ইচ্ছা থাকে; টকশো ঘোড়া সাহেদকে ঘোড়দৌড়ে নামিয়ে দিয়ে চাবুক হাতের ঘোড় সহিসদের খুঁজে বের করতে হবে। কারা সাহেদকে প্রতিটি টকশোর আগে; তোতা-পাখির মতো বাক্য গুঁজে দিয়েছে ওর ঠোঁটে। যারা এখন 'সাহেদ আমাদের সামনে গিমিক করেছিলো; সে ব্লাফ দিয়েছে বলে দুগ্ধপোষ্য শিশু সাজছে; সেই দলীয়-টি আর পি খেকো পেশাদার সাংবাদিকদের সম্মিলিত অপরাধ চিন্তার বলি আজকের সাহেদ।

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় 'সাহেদ গ্রেফতার'-এর খবর প্রচারিত হওয়ায় গোটা বিশ্ব এখন তাকে চেনে। সুতরাং পাতকুয়া চিন্তার হারকিউলিস ভাইয়েরা অভ্যাসবশত সাহেদকে বে-আইনি শারীরিক নির্যাতন করলে কিংবা বে-আইনি ক্রসফায়ার করলে বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলো সক্রিয় হবে। সাহেদকে খেয়ে দেয়ার গ্রামীণ ক্ষুধা থাকলে তা পরিহারের অনুরোধ জানাই। বিশ্বগ্রামে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক তদন্ত সমসাময়িক সংস্কৃতি। পাতকুয়ার আত্মবিশ্বাস হচ্ছে নিজের সীমাবদ্ধ জগতকে পৃথিবী ভাবার ভ্রান্তি। সাহেদের জন্য আইনি রক্ষাকবচ চাই। আমরা জানতে চাই; কোনো বুড়ো ভামেরা সাহেদকে তার সরলতার সুযোগ নিয়ে টকশো ঘেউ ঘেউ এর তোতা-পাখি বানিয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আজ এই অপরাধ জগতের গুঢ়চক্রে নিয়ে এসেছে।

সাহেদের যে ফেইক করোনা রিপোর্ট দেওয়ার অপরাধ; এর চেয়ে বড় অপরাধ স্বাস্থ্যমন্ত্রী-স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক করেছেন। তাদের আগ-পাছ বাঁচিয়ে 'সাহেদ'-কে ধরে গলায় জুতার মালা পরিয়ে পাতকুয়া চারপাশে ঘোরানোর যে শতবর্ষের গ্রামীন ঐতিহ্য; এটা তীব্র বিবমিষা আনে। সার্কাসের রিং মাস্টারদের অক্ষত রেখে বানর-ঘোড়া-জোকার হত্যার এই ঘাতক প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই।

লেখক: গণমাধ্যম কর্মী

ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এসকেএস