পদ্মায় সাইক্লোন শেল্টার, ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২০, ২৩:০৯

চাঁদপুরের রাজরাজেশ্বরের লক্ষ্মীচর এলাকায় পদ্মা নদীতে দুর্ঘটনার ফাঁদ এখন বিলীন হওয়া সেই স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারটি। পদ্মায় ডুবে থাকা এ ভবনের কারণে সেখানে নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

তারা জানান, নদীতে ভবনটি বিলীন হওয়ায় এবং পানি বেশি হওয়ায় এখন তা পানির নিচে রয়েছে। জোয়ারের সময় ভবনটি পানির নিচে চলে যায়, আর ভাটার সময় ভবনের উপরের অংশ কিছুটা দেখা যায়। আর পদ্মা নদীর এ রুট দিয়েই ঢাকা, চট্টগ্রাম, আরিচা, নোঙরবাড়ি, মাওয়া, ফরিদপুর এলাকায় চলাচলকারী মালবাহী জাহাজাগুলো।

রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, ভাঙনের কারণে স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারটি জোয়ারের সময় পানির নিচে তলিয়ে থাকে। আর ভাটার সময় ভবনের উপরের কিছু অংশ দেখা যায়। এখন কোন জাহাজ যদি এর উপর দিয়ে যায়, তাহলে তো দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।

তিনি জানান, মালবাহী শিপ ও জাহাজগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, আরিচা, নোঙরবাড়ি, মাওয়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়ত করে এ রুট দিয়েই।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এখানে নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি। আমি বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। এখানে কোন নিশানা না দিলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, এ অবস্থায় সেখানে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকতেই পারে। এ জন্য ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব বিআইডাব্লিটিএ অথবা বিআইডাব্লিউটিসির।

তিনি জানান, বর্তমানে মেঘনা নদীর চাঁদপুর পয়েন্টে বিপদ সীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

চাঁদপুর নৌ-পুলিশের ওসি আবু তাহের বলেন, সেখানে বাঁশ দিয়ে একটি নিশানা টাঙিয়ে দিলেই তো হয়। এটি তো চেয়ারম্যানই করতে পারেন। আমরা তো আর সেখানে পুলিশ পাহারা দেব না।

এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, আমি ইউপি মেম্বারকে বলেছি- আপাতত বাঁশ দিয়ে লাল নিশানা টাঙিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু বাঁশ দিয়ে লাল নিশানা দিলে দিনে তা দেখা যাবে। কিন্তু রাতে দেখা যাবে না। তখনই তো দুর্ঘটনার আশঙ্কাটা বেশি। তাই এখানে একটি বয়া বাতির মতো কোন লাইটের ব্যবস্থা করার খুবই জরুরি।

উল্লেখ্য, চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে পদ্মা ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার। সেই সাথে স্কুল এলাকার লক্ষ্মীরচরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক দিনের ভাঙনে ভবন এলাকার চারপাশে নদীতে চলে যায়। ভবনটি পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভবনটি নির্মাণের পর উদ্বোধন না হলেও তড়িগড়ি করে গত এক মাস আগে তা হস্তান্তর করা হয়। সাইড সিলেকশনে অনিয়মের কারণেই বিপুল পরিমাণ সরকারি টাকা জলে গেল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এছাড়া বছরের পর বছর নদী থেকে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনও ভাঙনের প্রধানতম কারণ হিসেবে দায়ি করেন স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ওই স্থানে এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করাটাই ঠিক হয়নি।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার জানান, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নটি চারপাশে পদ্মা-মেঘনা নদীবেষ্টিত। বর্তমানে পদ্মা-মেঘনার পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি ও প্রচণ্ড স্রোতে ভবনটি তলিয়ে গেছে। এই ভবনটি নির্মাণের পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন পরামর্শ নেয়া হয়েছে কিনা তা আমি জানি না। তাছাড়া এই স্থানে এই স্থাপনা নির্মাণ করাটাই ঠিক হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :