নীতিহীন মেধাবী কেমনে তৈরি হয়?
নীতিহীন মেধাবী কেমনে তৈরি হয়? নীতিহীন মেধাবী হওয়ার উপাদান পরিবার থেকে সমাজ সর্বস্তরে ছড়িয়ে আছে। ছোটবেলায় মা-বাবারা ইচ্ছা করেই সন্তানের বয়স লুকায়। মুখে ধর্মের খই ভাজা লোকজনও একাজ থেকে বাদ যায় না। কোমলমতি বাচ্চারা দেখে মিথ্যা বললেই বয়স কমিয়ে দেওয়া সম্ভব। তারা বাসায় যে তারিখে জন্মদিন পালন করে স্কুলের নিবন্ধনে তা অন্য তারিখে লেখা থাকে। এভাবে প্রাইমারি স্কুল থেকে কিছু কিছু বাচ্চারা অনৈতিকতার একটা শিক্ষা পায়।
আজকাল বেশিরভাগ স্কুলগুলোতে শিক্ষকরা সবকিছু ক্লাসে পাঠদান করেন না। কারণ সেগুলো টিউশনে যত্ন সহকারে পড়ানো হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা অল্পবয়সেই বুঝে ফেলে টাকার কাছে শিক্ষা বিক্রি হয়ে গেছে। আবার কয়েক কাঠি সরেস শিক্ষকরা তাদের কাছে টিউশনে না পড়লে পরীক্ষায় ভাল মার্কস দেন না। ফলে মেধাবীরা ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাদের কাছে বাসায় পড়তে যায়।
হাতেগোনা কলেজ ছাড়া সবখানে ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে নাম্বার দেওয়া হয়। এগুলো ওপেন সিক্রেটের মতো। অনেক মেধাবীরা বাধ্য হয়েই এসএসসি আর এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষায় টাকা দিয়ে নাম্বার কিনে নেয়।
দিন যত গেছে তত আমরা জানতে পারছি কত শত উপায়ে মেডিকেলে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে জালিয়াতি করে অথবা সহয়তা নিয়ে ভর্তি করানো হয়। যারা দুই নাম্বারি করে ভর্তি হয় তারা জেনে যায় সারাজীবন এভাবেই নীতিহীন মেধাবী হওয়া যায়।
চাকরি ক্ষেত্রেও আজকাল দেখা যাচ্ছে টাকা ছাড়া অনেকেই কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাচ্ছেনা। ফলে এই মেধাবীরা ঘুষ দিয়ে চাকরি পাচ্ছে। আর নীতিহীন মেধাবীরা চাকরি ক্ষেত্রেও দুর্নীতি করছে। পরিবার, সমাজ আর সিস্টেম যতদিন অনৈতিকতার প্রশ্রয় দিবে ততদিন নীতিহীন মেধাবী তৈরি হতে থাকবে। এই দুষ্টচক্র থেকে বের হওয়া যাবেনা।
লেখক: পি এইচডি গবেষক, জাপান
ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/এসকেএস