মানি লান্ডারিং মামলায় ফরিদপুরে যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২০, ১৬:৫৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরে এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শহরের পূর্ব খাবাসপুর লঞ্চ ঘাট এলাকাস্থ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসিবুর রহমান ফারহান (৪০) শহরের পূর্ব খাবাসপুর লঞ্চ ঘাট এলাকার শওকত মো. কামালের ছেলে। আসিবুর শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ফারহান শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাইন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এই দুই বন্ধুর মধ্যে ফারহান ছিলেন খন্দকার মোশাররফের ভাই খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবরের অনুসারী।

২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে ফরিদপুরে সোনালী ব্যাংকের কাছে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মারা যান ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক সেবিকা। এ ঘটনার সঙ্গে আসিবুরের ক্যাডার বাহিনী জড়িত। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর তিনি আত্মগোপন করেন।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, আসিবুরকে ঢাকার কাফরুল থানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) করা মামলায় সিআইডির চাহিদা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, তাকে শনিবার বিকালে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। পরে তাকে ফরিদপুর জেলখানা থেকে নিজেদের জিম্মায় নেবে সিআইডি, ঢাকা।

সিআইডির চাহিদা অনুযায়ী ফরিদপুরের পুলিশ গত শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টা থেকে শনিবার দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত আসিবসহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য দুইজন হলেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভি (৬১) এবং জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন (৫৪)।

 

প্রসঙ্গত, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ গত ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনে এ মামলাটি করেন। এ মানি লন্ডারিং মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী ২০১৫ এর ৪(২) ধারায় এ মামলাটি করা হয়।

সিআইডি এ মামলায় দুই ভাইয়ের ১০দিনের রিমান্ড চায়। গত ১৩ জুলাই ভার্চুয়াল কোটের মাধ্যমে এ রিমান্ড শুনানি হয়। ওই সময় ফরিদপুর কারাগারে থাকা অবস্থায় জেল গেটে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে এ শুনানিতে অংশ নেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১৯ জুলাই ভোরে সিআইডি দুই ভাইকে ফরিদপুর জেলখানা থেকে তাদের জিম্মায় নেন। তাদের সারাসরি ঢাকার মালিবাগস্থ সিআইডির কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। দুইদিন রিমান্ড শেষে সিআইডি গত ২১ জুলাই পুণরায় ১০ দিন করে রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৪ জুলাই মোট পাঁচ দিন রিমান্ড শেষ হওয়ার পর রুবেল ও ররকতকে মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নাজমুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন ও আসিবুর রাহমানকে মানি লন্ডারিং মামলায় সিআইডি পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

 (ঢাকাটাইমস/২আগস্ট/কেএম)