আমিরাতের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সন্দেহ ইরান-কাতারের

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২০, ০৮:৫২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

মঙ্গলগ্রহে একটি অনুসন্ধানী রকেট পাঠানোর দু-সপ্তাহের মধ্যে তাদের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম চুল্লিটি চালুর পর উচ্ছ্বসিত সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। তবে এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ইরান কাতারের।

ইউএই বলছে দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির চারটি চুল্লিই চালু হওয়ার পর এখান থেকে ৫.৬ গিগা-ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে যা দিয়ে দেশের ২৫ শতাংশ চাহিদা মিটবে। কিন্তু ২০১২ সালে ২০ বিলিয়ন (দুই হাজার কোটি) ডলারের এই প্রকল্প হাতে নেওয়ার পর থেকেই উপসাগরীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে সন্দেহ-বিতর্ক চলছে।

বিশেষ করে কাতার এবং ইরানের গভীর সন্দেহ যে আমিরাতের মূল লক্ষ্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি। কারণ উপসাগরীয় এই দেশটি দিনকে দিন মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক সংঘাতে যুক্ত হচ্ছে যার প্রমাণ লিবিয়া এবং ইয়েমেন।

গত বছর কাতার জাতিসংঘ আণবিক সংস্থার (আইএইএ) কাছে লিখিত এক আপত্তি-পত্রে বারাকা পারমাণবিক স্থাপনাকে 'আঞ্চলিক শান্তি এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি' বলে বর্ণনা করে। কাতার বলে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা হলে তেজস্ক্রিয় উপাদান ১৩ ঘণ্টার মধ্যে তাদের রাজধানী দোহায় চলে আসবে।

শনিবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর এখনও কাতার বা ইরানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া শোনা যায়নি, কিন্তু তারা যে ক্ষোভে ফুটছে তা নিয়ে কারোরই সন্দেহ নেই।

বারাকা পারমাণবিক প্রকল্পের ওপর শুরু থেকেই গভীর নজর রাখছেন পারমাণবিক শক্তি বিষয়ে বিশ্বের শীর্ষ একজন বিশেষজ্ঞ পল ডর্ফম্যান। মার্চে প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণে তিনি লেখেন যে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান বাস্তবতায় এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হবেই কারণ 'পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সুযোগ করে দেয়'।

 ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের গবেষক এবং নিউক্লিয়ার কনসালটিং গ্রুপের (এনসিজি) প্রধান ডর্ফম্যান বলেন, 'ইউএইর এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ইতিমধ্যেই অস্থিতিশীল একটি এলাকাকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলবে। পরিবেশের জন্য যেমন ঝুঁকি, তেমনি এই অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা নতুন করে উস্কে দিতে পারে এটি।'

ইউএই অবশ্য জোর দিয়ে বলেছে, উদ্বেগ উৎকণ্ঠার কোনো কারণ নেই, তারা শুধুই তেল-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে।

কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে মেরুকরণের রাজনীতি দিন দিন যেভাবে প্রবল হচ্ছে - যার একদিকে সৌদি আরব এবং ইউএই এবং অন্যদিকে ইরান ও কাতার - তাতে করে আমিরাতের এই প্রতিশ্রুতিতে ভরসা করতে পারছে না অনেকেই। সূত্র: বিবিসি

ঢাকা টাইমস/০৩আগস্ট/একে