প্রশংসায় ভাসছে শেরপুর সদর থানা

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২০, ১৫:৫৪

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রশংসায় ভাসছে শেরপুর সদর থানা। এ থানার মফিজুল হক নামে এক পুলিশ কনস্টেবল চাকরি করতেন। তিনি অবসর গ্রহণ করার বিদায় লগ্নে  জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সবার আন্তরিকতা ও সম্মানের সঙ্গে তাকে বিদায় জানানো হয়। এ সম্পর্কিত কিছু স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ সদর থানার ওসি তার ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেন।

এরপর পরই জেলার নানা শ্রেণি পেশার মানুষ সদর থানায় কর্মরতদের প্রশংসা করে ব্যাপক কমেন্ট, শেয়ার ও লাইক দিচ্ছেন। এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।  সোমবার দুপুরে ওই পেইজটি ভিজিট করে এসবের সত্যতা পাওয়া যায়।

পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে ওই কনস্টেবলের  পেনশন ও সরকারি সুবিধাধিসহ যে কোন মানবিক সমস্যায় শেরপুর পুলিশ পাশে থাকবে।

সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, পুলিশ কনস্টেবল মফিজুল হক ১ নভেম্বর ১৯৮০ সালে পুলিশে যোগদান করেন।  দীর্ঘদিন চাকরি জীবন শেষে ৩১ জুলাই শেরপুরে ছিল তার শেষ কর্ম দিবস। এর আগে তিনি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ঝিনাইদহ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, বান্দরবন, ও ময়মনসিংহে কাজ করেছেন।

তিনি জানান, বিদায়ী পুলিশ কনেস্টবল ও তার পরিবারের জন্য দেয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী। পুলিশের গাড়ি দিয়ে মালমাল পৌঁছে দেয়া হয়েছে গ্রামের বাড়ি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে। পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে ওই কনস্টেবলের পেনশন ও সরকারি সুবিধাধিসহ যেকোন মানবিক সমস্যায় শেরপুর পুলিশ পাশে থাকবে।

সদর থানার ওসি তদন্ত মনিরুল আলম ভূঁইয়া বলেন, কর্মস্থলে যোগদান করে বর্তমানে বিরাজমান করোনা মহামারিতে সাহসিকতার সঙ্গে মানবিক পুলিশ হিসেবে বিভিন্ন ডিউটিতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন মফিজ। তিনি পুলিশ বাহিনীর সর্বনিম্ন পদে চাকরি করেও তার প্রতিটি কাজ পুলিশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছে।

সদর থানায় তাকে যে দায়িত্বই দেয়া হয়েছে সেখানেই আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। কোনো দিন ‘না’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি। তার দৈনন্দিন চলাফেরা থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজই পুলিশ বাহিনীর একজন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দক্ষ পুলিশ হিসেবে সিনিয়র অফিসারদের নজর কেড়েছে। তার প্রতিটি কাজই অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের কাছে উদাহরণ ও অনুস্মরণীয়।

দীর্ঘ কর্মজীবনে এই পুলিশ সদস্যের চাকরিতে কোনো লাল দাগ নেই। তার বিদায় অনুষ্ঠানে সহকর্মীসহ থানার বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা কান্নাজড়িত কন্ঠে তার কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

স্থানীয় একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মতিন বলেন, একজন কনস্টেবলের বিদায় লগ্নে সদর থানার আয়োজন অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

এসপি ও ওসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে কবির হোসেন নামে পুলিশের এক এসআই বলেন, পুলিশ বাহিনীর এ ধরনের আন্তরিকতা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ও তার পরিবারের সদস্যরা আজীবন স্মরণ রাখবে।

মাসুদ হাসান বাদল নামে এক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, কর্মজীবনের শেষ বেলায় সহকর্মীদের কাছ থেকে এমন সম্মান পাওয়া অন্যদের উৎসাহিত করবে।

কনস্টেবল মফিজুল হক বলেন, এক জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। ভুলত্রুটির বাইরে শত বিতর্কের মাঝেও সবশেষ পুলিশই মানুষের বিপদে জীবন দিয়ে হলেও পাশে থাকে। আমি একজন সামান্য সরকারি কর্মচারি। অবসরের দিনে আমার সহকর্মীদের শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় আমি অভিভূত।

(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/কেএম)