তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি, সরিষাবাড়ী মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২০, ১৮:৩২

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা (আইসিটি) আইনে মামলা হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সদস্য ছামিউল হক বুধবার ভোরে এ মামলাটি করেন।

সকল কাউন্সিলরদের অনাস্থা ও দল থেকে বহিষ্কারের পর এলাকা ছেড়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে মেয়র রোকন বিভিন্ন সময় ফেসবুক লাইভে এসে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এমপি ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে এ মামলা করা হলো।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার সাতপোয়া গ্রামের সাবেক শ্রমিকদলের নেতা মৃত ওবায়দুল্লাহর ছেলে ও পৌর মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকন গত মঙ্গলবার (৪ জুলাই) রাত ৮টার দিকে তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এমপিকে নিয়ে বিভিন্ন আক্রমণাত্মক, বিভ্রান্তিকর, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভীতি প্রদর্শনমূলক মন্তব্য করেন। যা সরকারের একজন নীতি নির্ধারক পর্যায়ের (মন্ত্রী পরিষদ) সদস্যকে নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এছাড়া গত ১০ মে ফেসবুক লাইভে আপত্তিকর মন্তব্য ও ১৬ মে বিভ্রান্তিকর পোস্টসহ বিভিন্ন সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে তিনি অপপ্রচার করছেন।

মামলার বাদী যুবলীগ নেতা ছামিউল হক জানান, মেয়র রোকন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে ধারাবাহিক আপত্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন। এতে সামাজিকভাবে প্রতিমন্ত্রী হেয়প্রতিপন্ন হওয়ায় বুধবার ভোরে সরিষাবাড়ী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রোকনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মেয়র রোকনকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবি জানান বাদী।

পৌরসভা সূত্র জানায়, মেয়র রোকনের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি, এডিপি ও নিজস্ব তহবিলের টাকা, কবরস্থান, বাস টার্মিনাল, ত্রাণ ও মশক নিধন কর্মসূচির বরাদ্দ আত্মসাৎ, টেণ্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, মদ্যপান, অস্ত্রের মহড়া, নারী কেলেঙ্কারি ঢাকতে গুম নাটক, কাউন্সিলর ও স্টাফদের মাসিক বেতন-ভাতা না দেয়া, সাংবাদিক, কাউন্সিলর ও সাধারণ মানুষকে হত্যার হুমকিসহ শতাধিক অভিযোগে গত ১ মে সব কাউন্সিলর একযোগে মেয়রকে অনাস্থা দেন। একইদিন বিকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সভায় রোকনকে ত্রাণ আত্মসাৎ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এতে তিনি পৌরসভায় অবাঞ্ছিত হয়ে পড়লে ১০ মে সকালে মেয়র রোকন পৌর ভবনে জোরপূর্বক ঢুকতে সশস্ত্র হামলা চালান। এতে কয়েক কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতাকর্মীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এসময় প্রতিবাদী জনতার বাধার মুখে তিনি পৌরসভায় ঢুকতে ব্যর্থ হলে ১৫ মে রাতের অন্ধকারে তার লোকজন দিয়ে সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ মাঠে পৌরসভার টাকায় নির্মিতব্য মুক্তমঞ্চ ও ভাস্কর্য ভাঙচুর করে রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষদের হয়রানির অপচেষ্টা করেন। এ ঘটনায় কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম থানায় মামলা করলে মেয়র রোকন এলাকা ছাড়া হয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুক লাইভ ও স্ট্যাটাস দিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য করছে আসছেন।

সরিষাবাড়ী থানার ওসি আবু মো. ফজলুল করীম জানান, তথ্য প্রতিমন্ত্রী সম্পর্কে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে আইসিটি আইনে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/৫আগস্ট/এলএ)