ইতিবাচক রাজনীতিতেই অমরত্ব!

প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২০, ১১:৩৮

গোলাম রাব্বানী

আমরা সমাজবিজ্ঞানে প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী আব্রাহাম মাসলোর ‘চাহিদা সোপান তত্ত্ব’ পড়েছি। ১৯৪৩ সালে আবিষ্কৃত এই মতবাদের মূল কথা হলো, প্রতিটি মানুষের মাঝে মূলত পাঁচটি চাহিদা বা অভাবের একটি সোপান বা সিঁড়ি বিদ্যমান। প্রথম চাহিদা পূরণ হলে মানুষ দ্বিতীয় চাহিদার দিকে ধাবিত হয়। এভাবে ক্রমানুসারে চাহিদা পূরণ হতে থাকলে মানুষ চাহিদার শেষ স্তরে পৌঁছায়। মানুষের এই অভাববোধ এবং তা পূরণের প্রচেষ্টা থেকেই তার যাবতীয় কর্মকাণ্ডের সৃষ্টি।

মাসলো তাঁর ‘থিওরি অব হিউম্যান মোটিভেশন’ বইতে পাঁচটি ধাপের কথা বলেছেন।

১. দৈহিক/মৌলিক চাহিদা

২. নিরাপত্তার চাহিদা

৩. প্রতিপত্তি ও প্রীতির চাহিদা

৪. আত্মমর্যাদার চাহিদা

৫. আত্মপ্রতিষ্ঠার চাহিদা

মানুষের মৌলিক চাহিদা যেমন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা। প্রভৃতি চাহিদা পূরণের পর মানুষ শারীরিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। এরপর ধাবিত হয় স্বাচ্ছন্দ্য, সখ্য-বন্ধুত্ব, সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধির দিকে। অতঃপর, বিলাসবহুল জীবন, ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রভৃতি অর্থাৎ সে চায় সমাজের অন্যান্যদের থেকে নিজেকে একধাপ উপরে রাখতে।

এভাবে যাবতীয় জৈবিক চাহিদা পূরণের পর সর্বশেষ ও সর্বোচ্চ ধাপে সে চায়, আত্মমর্যাদা আর সম্মান! যেন, মরে গেলেও অন্যরা তাকে স্মরণ করে অর্থাৎ মানুষ চায় অমরত্ব!

আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এটুকু বুঝি ও বিশ্বাস করি, আদর্শ ও নিষ্ঠার সাথে মানুষের জন্য ইতিবাচক রাজনীতি করে আপনি জীবনের যেকোনো স্টেজেই (এমনকি জীবনের ১ম ধাপেই) চাহিদা পূরণের সর্বোচ্চ পর্যায় ছুঁতে পারেন। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সর্বোচ্চ ভালোবাসা আর সম্মান অর্জন করতে পারেন, যা অর্থ-প্রতিপত্তি আর ক্ষমতার বহু ঊর্ধ্বে!

তাই, রাজনীতি করে, ত্যাগ স্বীকার করে কি পেয়েছি, কি পেলাম এ জাতীয় হতাশাবোধ ঝেড়ে ফেলে, মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার যান। বিনিময়ে পাবেন, গণমানুষের অন্তর্নিহিত সম্মান-ভালোবাসা, অমরত্ব!

আপন মনে গাইতে থাকুন, 'আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেব না ভুলিতে…।'

লেখক: সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ

ঢাকাটাইমস/৬আগস্ট/এসকেএস