‘রুই-কাতলা ধরা পড়ার ভয়েই হাসপাতালে অভিযানে অনুমতি’

প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২০, ২১:৪৬ | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২০, ২১:৪৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনার আগে অনুমতি নিতে হবে- এমন নির্দেশনার সমালোচনা করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। বলেছেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালালে রুই-কাতলা বেরিয়ে আসতে পারে, সেই শঙ্কা থেকে অভিযান চালানোর আগে অনুমতির নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় এমন মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অনিয়ন্ত্রিত নীতির চিত্র প্রকাশের যে সুযোগটি সৃষ্টি হয়েছিল, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে, সেটিকে প্রতিহত করার অন্যতম উপায় ছাড়া কিছু হিসেবে ভাবাটা খুবই কঠিন।’

ভিডিও বার্তায় টিআইবি প্রধান এই সিদ্ধান্তের তিনটি কারণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনার আগে অনুমতি নিতে হবে, এই নির্দেশনার পেছনে একাধিক উপাদান কাজ করে থাকতে পারে। যদি পূর্বানুমতি লাগবে বলে আমরা ধরেও নিই তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তো একটা নির্দেশনার মাধ্যমেই বলে দেয়া যায়-কার্যকরভাবে অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং আইনের অপব্যবহার না করে।’

টিআইবি প্রধান বলেন, ‘সেটি না করে প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুমোদন লাগবে, এর অর্থ হচ্ছে- একদিক থেকে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ছিলেন, তারা ভেবেছেন বা তাদের একাংশ মনে করেছেন চুনোপুঁটি টানাটানি করলে রুই-কাতলা বেরিয়ে আসতে পারে যা তাদের একাংশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।’

যোগসাজসের কারণে হোক বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ যে কারণেই হোক, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হতে পারে বলে করেন ইফতেখারুজ্জামান। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রভাব সৃষ্টি করেছিলেন যেটি দেশবাসী জানেন। তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস নেই; যে তারা তাদের দায়িত্ব স্বচ্ছতার সঙ্গে, নৈতিকতার সঙ্গে দুর্নীতিমুক্ত হয়ে পরিচালনা করতে পারেন। যদি তাই হতো তাহলে তো পূর্বানুমতির বিষয়টি লাগার কথা নয়।’

তৃতীয় কারণ হিসেবে ইফতেখারুজ্জামান ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিন্তু প্রকারান্তরে বলে দিচ্ছে, আর এটা হচ্ছে-আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার না করে দমন করতে পারবে। এই ধরনের আস্থা মন্ত্রণালয়ের নেই। যেটি আবার অবশ্যই দেশবাসীর একাংশের মধ্যেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সম্পর্কে আছে।’

‘তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে আস্থাহীনতার সংকট রয়েছেই, যেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। সেটি কিন্তু সরকার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখন সিল দিয়ে বলে দিল।’

(ঢাকাটাইমস/০৭আগস্ট/এনআই/জেবি)