ন্যায্য পারিশ্রমিক পেলে ‘দুস্থ শিল্পী’ কথাটি শোনা লাগত না

বিনোদন প্রতিবেদক
| আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২০, ১৩:০৯ | প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট ২০২০, ১২:২৪

দেশবরেণ্য প্রয়াত কণ্ঠশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর সুযোগ্য উত্তরসূরি ছেলে প্রতীক হাসান। বাবার মতোই সুরেলা মিষ্টি গায়কী তার। এরই মধ্যে বেশ কিছু গান দিয়ে তিনি সংগীতপ্রেমীদের মনে অন্যরকম একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে ফেলেছেন। অডিও গানের পাশাপাশি প্রতীক গান করেছেন নাটক এবং চলচ্চিত্রে। তার সমসাময়িক কাজ নিয়ে এই শিল্পী কথা বলেছেন ঢাকা টাইমসের সঙ্গে।

আপনার নতুন গান প্রসঙ্গে জানতে চাই?

করোনার কারণে সবাই ঘরবন্দি। ঘরে বসে কিছু কাজ করছি। বঙ্গবন্ধুর শতবার্ষিকীর দুটি গান করেছি। বঙ্গ বিডির একটি গান করলাম। সচেতনামূলক কাজও করছি। ঈদের দুটি নাটকে গান করেছি। এছাড়া চলতি বছরে আরও অনেকগুলো কাজ করার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু করোনার কারণে সেগুলো বন্ধ রয়েছে। করতে পারবো কিনা তাও জানি না। দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হলে ডিসেম্বরে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

ভার্চুয়ালি কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

একদিকে ভালো, অন্যদিক চিন্তা করলে খারাপ। যারা বাইরে বসে কাজে অভ্যস্ত তারা তো ঘরে বসে কাজ করে স্বাছন্দ্যবোধ করবে না। আমাদের কাজের যে ধরণ, তাতে ঘরে বসে কাজ করলে অলসতায় ধরবে। সবাই একসঙ্গে বসে কাজ করলে কাজের প্রতি যে ডেডিকেশন আসে, সেটি একা বসে করলে আসে না। ভার্চুয়ালি কাজ করা মোটেও আনন্দায়ক হবে না, কারণ বাংলাদেশের নেটওর্য়াকের অবস্থা খুবই দুর্বল। যেকোনো কাজ করতে গেলে নেটওর্য়াকের কারণে কাজটি অনেক দীর্ঘায়িত হয়ে যায়। ৩০ মিনিটের কাজ দুই ঘণ্টা লেগে যায়। কাজটি পাঠানোর পর কারেকশন আসলে আবার একই সময় ব্যয় হয়। এ ক্ষেত্রে বলব, ভার্চুয়াল কাজে বাজে অভিজ্ঞতা।

ঘরবন্দি মানুষের জন্য বিনোদন দুনিয়ার তারকাদের এখন অনেক দায়িত্ব। আপনার কী মত?

এখন আমরা সবাই যে সময়টা পার করছি এ সময়ে সবার মনে ডিপ্রেশন কাজ করছে। সবাই এক ধরনের ঝামেলার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন। একটা ভালো কাজের জন্য মন ভালো থাকা খুবই জরুরি। এখন কেউই ভালো নেই। এই সময়টা গান অনেক বড় প্রাপ্তি। বিনোদনের লোকজনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের মন ভালো রাখার। সাধারণ মানুষের যখন মন খারাপের দিন শুরু হয় তখন শিল্পীদেরও মন খারাপ হয়। শিল্পীরা মানুষের মন ভালো করে আবার খারাপও করে। নাচায় হাসায় আবার কাঁদায়। করোনার কারণে আমাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ। সে ক্ষেত্রে আমাদের অন্যদেরকেও মটিভেট করা কষ্টের। এ জায়গা থেকে আমাদের যুদ্ধ করতে হচ্ছে। বিনোদনকর্মী হিসেবে যেটুকু দায়িত্ব তা পালন করছি।

মহামারির এই সময়টায় যারা হতাশায় ভুগছেন, তাদের জন্য আপনি কী বলবেন?

হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অন্ধকার শেষে আলো আসবেই। সেই আলো আসার অপেক্ষায়। মেঘের পরে রোদ আসবে। মানুষের জীবনে ঝড় আসবে-যাবে, তবে সেই ঝড় কাটিয়ে উঠাটাই বড় প্রাপ্তি। ঝড় কাটিয়ে উঠার মনোবল রাখতে হবে। ধৈর্যশীল হতে হবে।

করোনার কারণে সংগীতাঙ্গন সংকটময় সময় পার করছে। এই অঙ্গনের ভবিষ্যৎ কী বলে মনে করছেন?

এখন সবার ভবিষ্যতই অনিশ্চিত। কবে নাগাদ এর সমাধান হবে কেউ বলতে পারে না। আগে যে রকম কাজ করেছি সে ধরণটি পরিবর্তন হয়ে যাবে। আর ভালো লাগা খারাপ লাগা দুটিই আছে। প্রিয় মানুষদের সঙ্গে অনেক দিন দেখা হবে না, তাদের খুব মিস করব।

যারা সংগীতকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন, তাদের কীভাবে মনোবল শক্ত রাখার কথা বলবেন?

নতুনদের জন্য এটি বড় ধরনের একটা ধাক্কা। পুরাতনদের জন্যও ধাক্কা। তবে নতুনরা খুব ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, যারা এই পেশার উপরই নির্ভরশীল। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সেই চলার পথটি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। এই ধাক্কা পুষিয়ে নেয়া অনেকের জন্য কষ্ট হয়ে যাবে। নবীন-প্রবীণ সবার জন্যই কষ্ট হবে। শিল্পীরা কখনও একবারে বিপদে না পড়লে মুখ খোলে না। একজন শিল্পী হয়ে অন্য শিল্পীর সেটা দেখাও কাম্য নয়।

শিল্পীদের নিয়ে একটা দুর্নামও আছে যে, শিল্পীদের শেষটা ভালো হয় না। শিল্পীদের শেষটা কেন ভালো হয় না সেটি যদি কেউ খোঁজে, তাহলে বুঝবে শিল্পীদের শেষ বয়সে কেন হাত পাততে হয়। আমাদের কাজের পারিশ্রমিক যদি দশ ভাগের এক ভাগও ঠিকমতো পেতাম তাহলে ‘দুস্থ শিল্পী’ কথাটি শোনা লাগত না।

ঢাকাটাইমস/৮আগস্ট/এসকেএস/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :