কুয়াকাটা যাওয়ার বিকল্প সড়কের সুইজগেটগুলোর বেহাল দশা

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০২০, ১৮:০৭

এস কে রঞ্জন, ঢাকাটাইমস

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা থেকে সাগরকন্যা কুয়াকাটা যাওয়ার বিকল্প সড়ক হিসেবে পরিচিত ধুলাসার ইউনিয়নের বাবলাতলা বাজার থেকে মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুর যাতায়তের প্রধান পাকা সড়কটির উপরের সুইজখালগুলো বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ওই সড়কটির কয়েকটি সুইজ খালের সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

নভেল করোনা ভাইরাস ও বর্ষা মৌসুমের কারণে দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী, জরুরি রোগী, কলেজ ও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ পর্যটকরা। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলা শহর থেকে সাগরকন্যা কুয়াকাটা যাওয়ার বিকল্প সড়কটির ধুলাসার ইউনিয়নের বাবলাতলা বাজার থেকে মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুর যাতায়তের প্রধান সড়কটি বেড়িবাঁধ হিসেবে কয়েকটি ইউনিয়নকে রক্ষা করছে। এসব ইউনিয়নে চাষাবাদের সুবিধার্থে জোয়ার-ভাটার পানি আসা-যাওয়ার জন্য সড়কটির উপরে কয়েকটি সুইজ খাল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে গোমলাখলা সুইজ গেট, মাইক ভাঙ্গা সুইজ গেট, লক্ষি বাজার সুইজ গেট, চাপলি বাজার সুইজ গেট, নয়া মিস্রি পাড়া সুইজ গেট, তুলাতলী বড়োহর পাড়া সুইজগেটগুলোর সংস্কার কাজ শুরু করা হয়।

গত বছরের শেষ দিকে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চায়না সিআইসিও (সিকো) কোম্পানি এসব সুইজ গেটের সংস্কার কাজ শুরু করে। এরপর নভেল করোনা ভাইরাস ও বর্ষা মৌসুমের কারণে দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। যাতায়তের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সুইজ গেটগুলোর উপরিভাগে অত্যন্ত নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে হাটু সমান কাঁদা পেরিয়ে যেতে হচ্ছে এলাকাবাসী ও পর্যটকদের।

শুকনা মৌসুমে ছোট গাড়িগুলো অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে পারলেও হালকা বর্ষা মৌসুমে সেই সুযোগটুকুও আর থাকে না। ফলে মিনি মৎস্য বন্দর খ্যাত বাবলাতলা বাজার থেকে মৎস্য বন্দর মহিপুর Ñআলীপুরে মাছ সরবরাহ করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারীদের। এছাড়াও খানাবাদ কলেজ, মিস্রিপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মিস্রিপাড়া ফাতেমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়তের অন্তরায় হচ্ছে এ সড়কটি। এ সড়কটির বেহাল অবস্থার জন্য মি¯্রপিাড়া বৈদ্যমন্দিরসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্পট দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পর্যটকরাও। শুধু তাই নয়, রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে দ্রুত ও সঠিক সময়ে প্রশাসনের লোকজন পৌঁছাতে সমস্যা হওয়ায় প্রতিনিয়ত এসব এলাকায় অবৈধ অপকর্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে। জরুরি রোগী নিয়ে বেগ পেতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

লতাচাপলি ইউনিয়নের তুলাতলী সুইজগেট সংলগ্ন বাসিন্দা সোবাহান হাওলাদার বলেন, এখান থেকে মহিপুর সদরে যেতে কয়েকটি জায়গায় ভাঙা ও কাদা পারাতে হয়। এতে যাতায়তে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার হবে এটাই আশা করছি।

এ বিষয়ে লতাচাপলি ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় বর্ষার পানিতে রাস্তাটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। ব্যবসায়ীদের মাছ পরিবহন, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, পর্যটক ও জরুরি রোগী যাতায়তে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও রাস্তাটি দিয়ে প্রতিনিয়ত ছোট-খাট দুর্ঘটনার সংবাদ শোনা যাচ্ছে। অতিদ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার পরিষদের সীমিত বাজেট হতে তাৎক্ষণিক এতোগুলো ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামত করা সম্ভব নয়। তাই অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

এ বিষয়ে কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রকৌশলী ওয়ালীউল্লাহ বলেন, বর্ষা মৌসুমে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করার সুযোগ নেই। তবে শুকনা মৌসুমে চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৮আগস্ট/কেএম)