সাত দিনে ওজন কমায় লেমন ডায়েটিং

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২০, ০৯:২৮

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

প্রয়োজনের তুলনায় শরীরের ওজন অধিক পরিমাণে বেড়ে গেলে তা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই অস্বস্তিকর। ওজন বাড়লে আপনার দৈহিক সৌন্দর্য কমে। ডাক্তাররা প্রায়ই সতর্ক করে দেন যে অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এমনকী ক্যানসারের মতো বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পাতলা থাকা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ওজন হ্রাস আপনার চেহারা এবং ব্যক্তিত্ব উন্নতি ছাড়াও রোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।

আপনার উচ্চতার সঙ্গে ওজনের সামঞ্জস্য থাকতে হলে বেছে নিতে পারেন লেমন ডিটক্স ডায়েটিং। ডিটক্স ডায়েটিং শরীরের ওজন ঠিক রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আমাদের স্ট্রেসভরা জীবনে এখন এই ডায়েটিংয়ের চল বেড়েছে। ডায়েটে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবারের সংযোজন তো আছেই, সাথে টানতে হচ্ছে ক্যালরি গ্রহণের উপর রাশ। লেমন ডিটক্স ডায়েটিং যা দিয়ে আপনি মাত্র সাতদিনেই নির্মেদ ও আকাঙ্খিত চেহারা পেতে পারেন।

 

লেমন ডিটক্স ডায়েটিং কি?

 

লেবুর ডিটক্স ডায়েটিং একটি বিশেষ ডায়েট যার নিয়মিত খাবারে সিংহভাগ লেবুর পরিমাণে সমৃদ্ধ হয়। ১৯৪০-এর দশকে স্ট্যানলি ব্যারো এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। 

এর আরেক নাম হলো মাস্টার ক্লিনজার কারণ লেমনেড আপনার শরীরের কোষ থেকে বিষাক্ত টক্সিন নিষ্কাশন করে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আপনাকে ভেতর থেকে চাঙ্গা করে তোলে।

ফলে আপনি বাইরের অসুখ-বিসুখ মোকাবিলা করতে বাড়তি উৎসাহ পান। বস্তুত এটা একটা স্ট্রিক্ট ফাস্টিং ডায়েট যেখানে আপনাকে পুরোপুরি লিকুইড এর উপর নির্ভর করেই দিনের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

ক্যালোরির ইনটেক কমানো এই ডায়েটের প্রধান লক্ষ।এই ডায়েট কোলন অঙ্গের উপকার করে। এটাকে এক্সট্রিম ডায়েট এই জন্য বলা হয় যে এই ডায়েট চলাকালীন আপনি কোনো সলিড ফুড নিতে পারবেন না। কিছুজন অবশ্য ডায়েটের শুরু ও শেষদিকে হালকা খাবার এড করে নেন।

 

লেবু কেন এটির মুখ্য উপাদান

 

লেমন ডায়েটে লেবুর প্রধান একটা ভূমিকা রয়েছে। লেবু একটি প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক সাইট্রাস ফল যা শরীরে এসিড ও ক্ষার এর ভারসাম্য বজায় রাখে।

 এর সাইট্রিক এসিড লিভার এর যত্ন নেয় ও ডিটক্সিফিকেশন করে। পাশাপাশি স্থূলতা কমায় ও ত্বকের জেল্লা ও বাড়ায়।

এই ডায়েটে প্রতিদিন ৬০০ ক্যালোরি অব্দি সর্বোচ্চ গ্রহণ করা যায়। সেলিব্রেটি রাও তাদের ব্যস্ত জীবনে ফিট থাকতে এই ডায়েট ফলো করে থাকেন।

 লেবুতে ভরপুর ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৩, বি৬, বি৯, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, দস্তা, লোহা,ক্যালশিয়াম, ফসফরাস ও কিছু পরিমানে কার্বোহাইড্রেট ও থাকে।

এতে থাকা অনেক এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ফ্রি রাডিক্যাল বের করে দেয় এবং হৃদরোগ ও ক্যান্সার থেকে আগাম সুরক্ষা প্রদান করে।

 

লেমন ডিটক্স এর ধাপগুলো

 

লেমন ডিটক্সিং সাত দিনব্যাপী চলা একটা সময়ব্যাপী প্রক্রিয়া। এখানে লিকুইডের উপরেই আপনাকে সাস্টেন করতে হয়।  তারপর আস্তে আস্তে নরমাল ডায়েটে ফেরত এনে ফ্যাট বার্ন করে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ফেরত আনা হয়। এই সময় যদি আপনি পারছেন না এরকম মনে হয় তবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ফ্রুট স্যালাড, কিনওয়া স্যালাড, স্প্রাউট, গ্রীন টি বা কিছু ভেজিস নিতে পারেন।

 

প্রথম ধাপ

 

এই স্টেপে জাঙ্ক ফুড পুরোপুরি বর্জন করতে হয়। ফ্রায়েড ওয়েলি ফুড বা প্রসেসড ক্যান ফুড যাতে কোলেস্টেরল থাকে এরকম টক্সিক বস্তু দূরে সরিয়ে রাখতে হয়। ব্রেকফাস্টে টক জাতীয় খাদ্য এবং লেমনেড বাড়াতে হয় এবং সাথে অল্প কার্বোহাইড্রেট থাকবে এরকম কিছু নিতে পারেন।

 

দ্বিতীয় ধাপ

 

এটা সবচেয়ে কঠিন ফেজ। এই পর্যায়ে শুধু ডিটক্স ডায়েট চলবে বা শরীরের শুদ্ধিকরন ধাপ বলা যেতে পারে এটিকে।   দিনে ৬ বার লেমনেড নিতে হবে।

 

তৃতীয় ধাপ

 

প্রতিদিনের ডায়েটে সলিড ফুডের পুনঃপ্রবেশ। প্রথমে কম কম করে কঠিন খাবার খেতে হবে।    যেমন এক কাপ দই ও সাথে কয়েকটা আমন্ড।    এরপর যুক্ত হতে পারে ভেজ স্যালাড বা স্যান্ডউইচ।    এইভাবে নর্মাল ডায়েট ফিরিয়ে আনুন।

 

কীভাবে বানাবেন লেমনেড

 

ফ্রেশ লেমন স্লাইস নিয়ে প্রেস করে তার জুস নিংড়ে রাখুন। এরপর তাতে মেপল সিরাপ, কেইন পেপার ও গরম জল এড করে ডিটক্স ড্রিংক রেডি করে ফেলুন।   স্বাদের জন্য খানিকটা মধু দিতে পারেন ভালো লাগবে। এটি হজম শক্তি বাড়াবে। ম্যাপল সিরাপ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই লো এবং পেপার ডিটক্স উপাদানে ভর্তি।

 

লেমনেডের উপকারিতা

 

ওবেসিটি রিস্ক কমায়। মেটাবলিজম স্ট্রং করে ক্যালোরি বার্ন করে।    যারা নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে পারেন না কিন্তু বিজি লাইফস্টাইল এ অভ্যস্ত তারা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেই সুফল পাবেন।    দৈহিক শক্তি বাড়ায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।    আলস্য ভাব কাটে ও কোষ্টকাঠিন্য এর সমস্যা দূরীভূত হয়।    ত্বকের জৌলুস ফেরত আনে। দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। শরীরে রেচন ও বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়।অর্গান গুলোর ফিলট্রেশন ক্ষমতা বাড়ে।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/আরজেড/এজেড)