হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘নরম সুর’

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২০, ০৯:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নির্ধারিত সময়ের (২৩ আগস্ট) মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন না করলে বন্ধ করা হবে না হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়ানস্টিক সেন্টার। এই সময়ের মধ্যে নবায়নের আবেদন করলেই হবে।

বেসরকারি হাসপাতালের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর আগের কঠোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রবিবার বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পরই নবায়নের সময়সীমা শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৩ আগস্টের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে লাইসেন্স নবায়ন নয়, লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করলেই হবে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নান বলেন, বেসরকারি হাসপাতালের বিষয়ে আমাদের নমনীয় হওয়ার কিছু নেই। এতদিন যারা আবেদন করেননি তারা যেন আবেদন করার সুযোগ পান, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ হবে না।

সচিব মান্নান বলেন, ‘আবেদন না করলে বোঝা গেল তিনি কেয়ার করছেন না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটা লাইসেন্স বাতিল, স্থগিত বা যে পদ্ধতি আছে, সেভাবেই করা হবে।’

বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বেসরকারি অনেক হাসপাতালের লাইসেন্স না থাকার বিষয়টি সামনে চলে আসত। তবে করোনার মধ্যে এমন চিত্র অহরহ পাওয়া যায়। রিজেন্টসহ বেশ কিছু হাসপাতালের বছরের পর বছর ধরে লাইসেন্স না থাকলেও করোনা চিকিৎসা দেয়ার জন্য সেসব হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও হয়। এক পর্যায়ে দেখা গেছে, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকেরই লাইসেন্সের মেয়াদ নেই। এরপরই এ নিয়ে নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

পরে সরকারি ছুটির মধ্যেই শনিবার জরুরি বৈঠক ডাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে যেসব বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা নেই, তাদের এই লাইসেন্স নবায়নের জন্য ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরদিনই বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক থেকে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে সব বেসরকারি হাসপাতালে তথ্য হালনাগাদ করা হবে। তারপর লাইসেন্স নবায়নের সময়সীমা ঠিক করে দেয়া হবে। এরপরেও যারা লাইসেন্স নবায়ন করবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার বিষয়েও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বোঝাপড়া করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে।

তবে স্বাস্থ্য সচিব আশ্বাস দিয়েছেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান চলতে থাকবে। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ‘অভিযান’ শব্দটি নিয়েই আপত্তি তুলেছেন। তিনি বলছেন, এসব হাসপাতালে চলবে ‘অনুসন্ধান’।

রবিবার মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অভিযান তো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চলে। আর তা চলে পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। হাসপাতালে চলবে অনুসন্ধান। সে প্রক্রিয়া চলবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সমঝোতা হয়েছে। সে অনুযায়ী এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে গেলে তা যৌথভাবে করা হবে। এককভাবে তারা কোথাও যাবেন না। দরকার হলে আমরা তাদের নিয়ে যাব।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/বিইউ/এমআর)