টোটকা সমাধান রাষ্ট্রকে স্থায়ী রূপ দেয় না

সরদার আমিন
 | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০২০, ১৪:০৭

মাহবুব ক‌বির মিলন তিন মাসে দেশকে দুর্নী‌তিমুক্ত করবেন। এটাকে এত সরলভাবে নেওয়া মানে রাষ্ট্রর মতো বিরাট বিষয়ে জানাতে ঘাট‌তি আছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারও দশজন নিয়ে তিন মাসে দুর্নী‌তি বন্ধ করেন সাম‌য়িক, তা টিকে না। তত্ত্বাবধায়ক দুই বছর থাকলে তার টোটকা চি‌কিৎসায় পুরো অর্থনী‌তি ধসে পড়তে থাকে।

মিলন সাহেব কীভাবে কি করবেন তা বলেননি। দুনিয়াতে এরকম উদাহরণও নেই যে কাউকে যা করার ব্লাঙ্ক সার্টিফিকেট দিয়েছে। এত বোকামি কোনো রাষ্ট্র করতে পারেনি। কারণ কেবল দুই লাখ লোককে গু‌লি করে মারলে বা কিছু নিয়ম আরোপ করলেই তা কোনো স্থায়ী সমাধান না। সাম‌রিক সরকাররাও এসে এমন ভাব ব্যক্ত করেন, রাষ্ট্র চালানোর ব্যাকরণ বা বিজ্ঞান পালটে দিয়ে পরে নানা সমস্যার সৃ‌ষ্টি করে যান। এটা সু‌বিশাল রাষ্ট্র বিজ্ঞানের কাজ যার ইতিহাস ও গ‌বেষণা চার হাজার বছরের হলেও উপসংহার নিয়ে এখনো বিতর্ক।

কেউ অসুখ দূর করতে রাস্তার পাশের ক্যানভাচারের মলম কেনে, কেউ টং দোকানের হো‌মিওপ্যা‌থিক খায়, কেউ বড় হাসপাতালে যায়। রাষ্ট্র বিষয়‌টি মলম চি‌কিৎসার না। সেজন্য এসব উদাহরণে কাজ হবে না। সর্বোচ্চ ক্ষমতা ও পুরো এক‌টি দলের তৃণমুল থেকে কার্যকা‌রিতা দুর্নী‌তি অনিয়ম মুক্ত করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছি‌লেন ড. ইউনূস। তাকে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম তিন মাসের যে রেজাল্ট তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারই রাষ্ট্র চালালে ভালো হতো না? তি‌নি জবাব দিয়েছিলেন (আমার ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক বই দ্রষ্টব্য), না, এটা সাম‌য়িক। সরকারের সাথে সমগ্র জনগণ জ‌ড়িত। জনগণের সা‌থে পা‌র্টি তৃণমুল পর্যন্ত জ‌ড়িত থাকা দল ছাড়া সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ না। সেজন্য টোটকা সমাধান রাষ্ট্রকে স্থায়ী রূপ দেয় না।

হ্যাঁ, সর্বোচ্চ ক্ষমতা সামান্য পারে তত্ত্বাবধায়কের মতো, সেটা স্থায়ী হয় না। নিচের কর্তারা তা পারে না। সেজন্য মিলন সাহেব এভাবে বলাটা স্রেফ চাকরি নিয়মের শৃঙ্খলার প‌রিপ‌ন্থী। তি‌নি বরং চাকরি ছাড়েন, দল করেন, জনগণকে বুঝান, ক্ষমতা নেন, তারপর সফল হলে য‌দি তা ঐ‌তিহা‌সিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানের কোনো একটা আদর্শের পা‌র্টি হয়। কমনসেন্স দিয়ে হবে না। হিটলারও চাকরি ছেড়ে দল করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিল তার কমন‌সেন্স মতো জার্মানি চালাতে। শেষ প‌রিণ‌তি কি?

দেশের সরকার অক্ষম, ব্যর্থ, সেজন্য মিলন সাহেবের কথায় অনেকে সমর্থন দিচ্ছে, এটা স্বাভা‌বিক। কিন্তু এটা মোটেই স‌ঠিক না। হ্যাঁ তার মতো কিছু কর্মকর্তা তো আছে, তাদের সাফল্যও আছে, কিন্তু কর্মচারীরা বিপ্লব করতে পারে না। সেজন্য তার পদে থেকে যা বলছেন তা শা‌স্তি‌যোগ্য। তি‌নি তো ফ্রি মানুষ না। আইনের বন্ধনের মানুষ। সেখানে এটা বলা এক প্রকার বিদ্রোহ। নানা কৌশলে বলতে পারতেন।

তবে হ্যাঁ, এতেও সরকারের অক্ষমতা প্রকা‌শিত হয়েছে। রাষ্ট্র যে ব্যর্থ তা তুলে ধরা হয়েছে। তবে এরকম বলাকে সরকার মেনে নিতে পারে কি? ভালো সরকারও অ্যাকশন নিতে বাধ্য।

লেখক: লেখক, প্রকাশক ও ইঞ্জিনিয়ার

ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :