প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে বেলারুশে বিক্ষোভ

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২০, ১৫:২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ হতেই বেলারুশের একাধিক শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, ভোটে কারচুপি হয়েছে। রবিবার রাত থেকে লোকে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে। খবর ডয়চে ভেলের।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক্সিট পোল বলছে, আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বেলারুশে ষষ্ঠবারের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছেন। তিনি পেতে পারেন প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট। আর তার প্রধান বিরোধী শ্বেতলানা টিখানোভস্কায়া পেতে পারেন সাত শতাংশেরও কম ভোট। এরপরই বিরোধীরা দাবি করেন, ভোটে কারচুপি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাজধানী মিনস্কে প্রচুর বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছেন। তাদের মুখে স্লোগান। গাড়ির হর্ন বাজছে, সাইরেন বাজছে। কয়েকশ দাঙ্গাবিরোধী পুলিশ হাতে ঢাল নিয়ে দঁড়িয়ে আছে। কিছু বিক্ষোভকারী ময়লা ফেলার গাড়ি দাঁড় করিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেছিল। পুলিশ তখন জলকামান ছোড়ে, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়।

বেলারুশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, রবিবার রাত থেকে পুলিশ শহরে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করছে। কতজনকে ধরা হয়েছে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না।

ভিয়াসনা মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অ্যালেস সংবাদসংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, 'কয়েকশ লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়োকশ লোক আহত হয়েছেন। পুলিশ বিক্ষোভ থামাতে প্রবল বলপ্রয়োগ করছে।'

বিরোধী নেত্রী শ্বেতলানা জানিয়েছেন, তিনি এক্সিট পোলের ফল বিশ্বাস করেন না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন তার দিকে আছে। শ্বেতলানা শিক্ষকতা করেন। তার স্বামী সরকার-বিরোধী ব্লগার। কিন্তু সরকার তাকে জেলে পুরে দেওয়ায় তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেননি। তখন শ্বেতলানা দাঁড়ান। তার জনসভায় প্রচুর লোক হয়েছে। বস্তুত, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে বেলারুশে কোনো জনসভায় এত লোক হয়নি।

শ্বেতলানার সমর্থক ভেরোনিকা বলেছেন, 'আমার ধারণা, আইনের রক্ষকরা জনতার দাবি মানবেন। তাহলেই রক্তপাত ছাড়া মিনস্কে শান্তি ফিরবে'। ভেরোনিকার স্বামীও ভোটে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। তারপর ভেরোনিকারা শ্বেতলানাকে সমর্থন করছেন।

কিন্তু রাশিয়ার প্রবীণ এমপি এবং স্টেট ডুমা কমিটির চেয়ারম্যান লিওনিড স্লাটস্কি বলেছেন, বেলারুশের অবস্থা ২০১৪ সালের ইউক্রেনের মতো হতে পারে। যেখানে রুশপন্থী প্রেসিডেন্টকে লোকে রক্তাক্ত বিপ্লবের মাধ্যমে উৎখাত করেছিল। তার মতে, বেলারুশের লোকেরা তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে সক্ষম। বিদেশি শক্তি যেন এখানে হস্তক্ষেপ না করে।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোকে বলা হয় 'ইউরোপের শেষ ডিক্টেটর'। তিনি ১৯৯৪ থেকে কড়া হাতে বেলারুশ শাসন করছেন। তিনি দাবি করেন, তিনি থাকলে বেলারুশে সরকারের স্থায়িত্ব থাকবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে লোকের ক্ষোভ বেড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি জানিয়েছে, ভোটের আগে এক হাজার ৩০০ জনকে

আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও আছেন। ঠিক সময়ে আমন্ত্রণ না পাওয়ায় ইউরোপের অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটি অ্যান্ড কোয়াপরেশনের প্রতিনিধিরা ভোট পর্যবেক্ষণ করতে পারেননি।

ঢাকা টাইমস/১০আগস্ট/একে