বোয়ালমারীতে মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মামলা

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২০, ২২:১৭ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২০, ২২:১৯

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পুকুর লিজ না দেয়ায় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে অশীতিপর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিয়ার উপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রবিবার আব্দুল মান্নান মিয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা ও তার ভাই মুরাদ মোল্যা, রাকিব, আহম্মদ ও নুরুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে আসামি করে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা করেছেন।

মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কদমী গ্রামের আবু মোল্যার ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের বনমালীপুর গ্রামের অশীতিপর বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিয়ার একটি পুকুর দখলের উদ্দেশ্যে লিজ নেয়ার জন্য পীড়াপিড়ি করতে থাকে মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা। তিনি মাদক কারবারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় তাকে পুকুর লিজ দিতে অস্বীকৃতি জানায় ওই মুক্তিযোদ্ধা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৪ আগস্ট বিকালে প্রায় ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায় সোনা মোল্যা।

মান্নান মিয়া সন্ত্রাসীদের নিভৃত করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হেনস্থা করে। তখন মান্নান মিয়ার নাতি আরিফ বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে আছমা বেগম ও পুত্রবধু মুক্তা খানম এগিয়ে গেলে তাদের কিলঘুষি মেরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে মিজানুর রহমানের সন্ত্রাসী বাহিনী। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আহতরা আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।

হামলার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে আব্দুল মান্নান মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, কদমীতে আমার একটি পুকুর রয়েছে। সেটির দখল নিতে শীর্ষ মাদক কারবারি মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা বিভিন্ন অপচেষ্টা চালায়। ব্যর্থ হয়ে পুকুরটি লিজ নেয়ার প্রস্তাব দিলে আমি অস্বীকৃতি জানালে সে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলায় গামছা পেঁচিয়ে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার পরিবারের লোকজন বাধা দেয়। তখন সন্ত্রাসীরা তাদের বেধড়ক মারপিট ও নারীদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার কেএম জহুরুল হক বলেন, একজন অশীতিপর বীরমুক্তিযোদ্ধার উপর ঘৃণ্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা মুঠোফোনে বলেন, আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে মঈনুল আমার সঙ্গে ঢাকায় ব্যবসা করতেন। আমার ছেলে অসুস্থ থাকায় আমি ছেলে চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সেই সুযোগে মঈনুল প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মঈনুলের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি জিডি করেছি। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে মামলা করেছেন তারা।

বোয়ালমারী থানার ওসি মো. আমিনুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে মামলা নেয়া হয়েছে। আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/কেএম)