ভালুকায় বন প্রহরীর চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ আগস্ট ২০২০, ১৬:৪৯

ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ী বিট অফিসের বন প্রহরী পলাশ মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। তিনি দায়িত্বে আসার পর থেকেই দুই বছর যাবত এ চাঁদা আদায় করছেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেও কোনো পরিত্রাণ পায়নি ভুক্তভোগীরা।

দুই বছর আগে আঙ্গারগাড়া বিট অফিস থেকে সাব অফিস হিসেবে মল্লিকবাড়ী বিট অফিসের নামে একটি ভাড়া বাসা রাখা হয়। তারপর থেকেই সেখানে স্বপরিবারে থাকেন বন প্রহরী পলাশ মিয়া। পলাশ এই বিটে আসার পর থেকেই ভালুকা টু সখিপুর রোডে চলাচল করা লাকড়ির গাড়ি, বাঁশের গাড়ি ও ফার্ণিচারের গাড়ি থেকে ২০০ থেকে এক হাজার টাকা চাঁদা আদায় করার নিয়ম করে।

কোনো গাড়ি চাঁদা না দিলে ওই গাড়ি আটকিয়ে রাখা হয়। তার এ কাজে সহায়তা করার জন্য স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়োগ দেন তিনি। পলাশ মিয়া উপস্থিত না থাকলে তারা টাকা উত্তোলন করেন। পলাশের এই টাকা তোলা এখন অনেকটা ওপেন সিক্রেট। বাজারের অনেক ব্যবসায়ী এই প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানিয়েছেন। এই অফিসে অন্য কোন কর্মকর্তা থাকেন না। তাই পলাশ একাই এখানে থেকে এসব অনিয়ম করছেন।

এ দিকে মল্লিকবাড়ী, নয়নপুর, গোবুদীয়া ও ভায়াবহ এলাকায় স্থানীয়রা বাড়ি করলে সেখান থেকে টাকা নিয়ে বাড়ি করার অনুমতি দেন পলাশ। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তাকে মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করার হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে ফার্নিচার ব্যবসায়ী শামীম মিয়া মোবাইল ফোনে বলেন, আমি সখিপুর এলাকা থেকে ফার্নিচার কিনে এনে এলাকায় ব্যবসা করি। মল্লিকবাড়ী বাজার পার হতে পলাশকে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে তিনি গাড়ি আটকে রাখেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মল্লিকবাড়ী বাজারের একজন হোমিও চিকিৎসক মুঠোফোনে বলেন, আমি আমার জমিতে বাড়ি করার সময় পলাশ মিয়া এই জমি বন গেজেটেট বলে বাধা দেয়। আমি তার কাছে গেলে তিনি অনেক টাকা চান। আমি প্রথমে তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেই। পরে আরও টাকার জন্য আমার কাছে তিনি একাধিকবার আসেন। টাকা না দেয়ায় নানারকম হুমকি দিয়েছেন তিনি।

মল্লিকবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আকরাম হোসেন বলেন, চার-পাঁচ মাস আগে স্থানীয় কয়েকজন এই টাকা তোলার ব্যাপারে অভিযোগ দিলে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি পলাশ নামের একজন বন প্রহরী টাকা তুলেন। পরে আমি বন্ধ করার ব্যাপারে বন বিভাগের অনেকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। কয়েকদিন মনে হয় বন্ধ ছিল। এখন আবার চালু হয়েছে কিনা আমার জানা নাই।

বন প্রহরী পলাশ মিয়ার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো বক্তব্য দিবো না, আপনি যা পারেন করেন।’

মানুষকে মামলা দেয়ার হুমকি দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো কোনো মামলা দেই নাই। আমি চলে যাওয়ার পর টের পাবেন পলাশ মিয়া কী জিনিস।’

মল্লিকবাড়ী বিট অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পলাশের টাকা তোলার ব্যাপারে আমরা জানি না। যাদের কাছ থেকে টাকা নেয় তাদেরকে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন, আমরা ব্যবস্থা নেব। আর ওখানে আমাদের কোনো বিট অফিস নাই। একটা রুম ভাড়া করে পলাশ থাকেন। আর সেখানে আমাদের কোনো বনভূমি নাই।

ভালুকা রেঞ্জ অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন, আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :