সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে ভলিউম বই গায়েব!

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২০, ২১:৩৪

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

রাজশাহী সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে একটি দলিলের ভলিউম বই গায়েব হয়ে গেছে। বার বার আদালত তলব করলেও ভলিউম বইটি পাঠানো হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, সেটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর শুধু এই ভলিউম বইর কারণে বছরের পর বছর এক আদিবাসী কৃষকের মামলা শেষ হচ্ছে না।

ভুক্তভোগী এই কৃষকের নাম অনিল কুমার মাহাতো। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মাধবপুর গ্রামে তার বাড়ি। তার বাবা মৃত বিরেন্দ্র মাহাতো মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে চলে যান। রেখে যান বেশ কিছু ধানী জমি। সেসব জমি অনিল কুমার মাহাতো ভোগ দখল করে আসছিলেন। হঠাৎ ২০০৭ সালে এলাকার বেশ কিছু ব্যক্তি দাবি করেন, বিরন্দ্রে মাহাতো ১৯৬৪ সালে এসব জমি তাদের কাছে বিক্রি করে গেছেন। এ নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা।

অনিল কুমার মাহাতো নাচোল সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। ২০১৪ সালে মামলার রায় হয় বিবাদীদের পক্ষে। অনিল কুমার মাহাতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জজ আদালতে আপীল করেন। এরপর আদালত কয়েকদফা ১৩ মে ১৯৬৪ সালের ৮৩৬৯ নম্বর দলিলের ১১১ ভলিউমের ৬৬ থেকে ৬৯ পর্যন্ত পৃষ্ঠা তলব করেন। কিন্তু রাজশাহী সদর সাব- রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে তা পাঠানো হয়নি।

প্রত্যেকবার সদর সাব-রেজিস্ট্রার চিঠি দিয়ে আদালতকে বলেছেন, তলবি সমন প্রাপ্তির পর থেকে এ পর্যন্ত ভলিউম বই খুঁজে না পাওয়ায় বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করতে না পারায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ভলিউম বইটি অনুসন্ধানে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পাওয়ামাত্র আদালতে পাঠানো হবে।

কিন্তু ভুক্তভোগী অনিল কুমার মাহাতো বলছেন, তার বিবাদীপক্ষ নকল কবলা দলিল দেখিয়ে তাদের পক্ষে রায় নিয়েছে। আসল দলিলের ভলিউম সংরক্ষিত আছে সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে। বিবাদীরাই সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়কে প্রভাবিত করেছে। যার কারণে ভলিউম বই পাঠানো হচ্ছে না। এ কারণে তার আপিল মামলা শেষ হচ্ছে না।

অনিল বলেন, ভলিউম বই আদালতে উপস্থাপন করা হলে তিনি মামলায় জিতবেন। এই কারণেই ভলিউম বই ছাড়া হচ্ছে না। তিনি এর সমাধান প্রত্যাশা করেন।

জানতে চাইলে সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার বাদল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ভলিউম বই হারিয়ে যাবে কোথায়? নিশ্চয় আছে। তবে এ বিষয়টি আমি জানি না। আমার আগের সাব-রেজিস্ট্রার তাহলে কোর্টকে এমন জবাব দিয়েছেন। আগামী সোম-মঙ্গলবারের দিকে ভুক্তভোগী কৃষক এলে আমি সেটি খুঁজে দেখার ব্যবস্থা করব।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/কেএম)