কম্পিউটার শেখার আড়ালে সামরিক প্রশিক্ষণ!

প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২০, ১৮:০২ | আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২০, ১৮:১১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর পল্টনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সিলেট থেকে গ্রেপ্তার নব্য জেএমবির সদস্যরা কম্পিউটার শেখার আড়ালে ‘সামরিক প্রশিক্ষণ’নিচ্ছিল। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনাও ছিল জঙ্গিদের।

বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মনিরুল ইসলাম।

গত দুইদিন অপারেশন এলিগ্যান্ট বাইট চালিয়ে নব্য জেএমবির পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান, সানাউল ইসলাম সাদি, রুবেল আহমেদ, আব্দুর রহিম জুয়েল ও সায়েম মির্জা। এসময় তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

মনিরুল বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। ২৪ জুলাই রাজধানীর পল্টনে পুলিশ চেকপোস্টের পাশে এবং ৩১ জুলাই নওগাঁর সাপাহারে হিন্দু ধর্মালম্বীদের মন্দিরে বোমা হামলা করে। এছাড়া ২৩ জুলাই হজরত শাহজালাল রহ. মাজার শরিফে আরেকটি হামলার পরিকল্পনা করে। এরমধ্যে পল্টন ও সাপাহারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হলেও পুলিশের কড়া নজরদারির কারণে সিলেটে হামলায় ব্যর্থ হয়।

ঈদুল আজহাকে ঘিরে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের কথিত ‘বেঙ্গল উলায়াত’ ঘোষণার পর পুলিশ জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করেছিল। এ অবস্থায় সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধে ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের সুপারিশ করে পুলিশ। এরপরই ২৪ জুলাই রাত পৌনে ১০টার দিকে পল্টনে পুলিশ চেকপোস্টের ২০০ গজ দূরে সড়কের পাশে রহস্যজনকভাবে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। তবে যেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা ছিল জনশূন্য। এর ফলে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

আটককৃতরা জানায়, নব্য জেএমবির শুরা সদস্য শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে তারা সিলেটের শাপলাবাগের একটি বাসায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণের আড়ালে সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল। শেখ সুলতান কফি শপে (বারিস্তা) কপি মেকার হিসেবে কাজ করেন। ২০১৯ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অনার্স সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়া সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক এবং সামরিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশে সিলেটের শাপলাবাগের বাসাটি ভাড়া নেন।

গ্রেপ্তার সানাউল ইসলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র। এছাড়া রুবেল আহমেদ ২০১৬ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ব্লু বার্ড সিলেট শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। তিনি সিলেটে টুকেরবাজারে সার, বীজ ও কীটনাশকের ব্যবসা করেন। আব্দুর রহিম জুয়েল রেন্ট-এ-কারের ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতেন। তার গাড়ি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা চলছিল। সায়েম মির্জা সিলেটের মদন মোহন কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র।

(ঢাকাটাইসম/১২আগস্ট/এসএস/জেবি)