লেবাননের বিস্ফোরণ কী শেখালো আমাদের?

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২০, ১২:২১

সাঈদ চৌধুরী

এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন লেবাননের বিস্ফোরণে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার! অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের গুদামে এমন বিস্ফোরণে লেবাননে এখন শোকের আহাজারি চলছে। নিজে বিস্ফোরিত হওয়ার মতো না হলেও এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরিত হয়ে এতো হতাহত!

আমরা ভুলেই গেলাম আমাদের নিমতলী আর চুড়িহাট্টার কথা। কতদিনই বা হয়েছে এই চুড়িহাট্টার ঘটনাটি! ৭০ জনের পোড়া দগদগে দেহ আমরা সেবার দেখেছিলাম। আমরা কি সরাতে পেরেছি পুরান ঢাকার সব কেমিক্যাল?

যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সারের একটি উপাদান হয়তো আগুনের সংস্পর্শে এসে এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে কিন্তু আমরা তো  রীতিমতো বিস্ফোরক কেমিক্যাল নিয়েই বসবাস করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। সালফিউরিক এসিড, কস্টিক ব্লিচিং, নাইট্রিক এসিড, হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মতো দাহ্য কেমিক্যাল নিয়ে আমাদের কেমিক্যাল গুদামগুলো বিস্ফোরণের জন্য তৈরি হয়ে আছে যেন!

অ্যামোনিয়াম থেকে বিস্ফোরণ আগেও হয়েছে। বিবিসির তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস সিটিতে ১৯৪৭ সালের ১৬ এপ্রিল এক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণ ঘটেছিল যাতে ৫০০ জন নিহত হয়, আহত হয় ৪ হাজার। একটি বিমানও ধ্বংস হয় তাতে।

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কেমিক্যাল গুদাম ও কেমিক্যাল ওয়্যার হাউজের ব্যাপারে শুধু অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উন্নতি নয়, প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনা। প্রতিদিন দুর্ঘটনা হয় না বলেই হয়তো আমরা ভুলে যাই। কিন্তু দুর্ঘটনা হলে যে মৃত্যু ঘটায় আর বিপন্ন করে মানুষের জীবন তাতে এই ভয়ানক মরণের ক্ষেত্রগুলো সরিয়ে ফেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ।

কেমিক্যাল গুদাম দ্রুত সরানো যেমন প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন উন্নত ব্যবস্থাপনা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ কামনা করছি। লেবাননের মতো, নিমতলির মতো আর চুড়িহাট্টার মতো আগুন আমরা আর দেখতে চাই না। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এসকেএস