চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন অব্যাহত, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২০, ২০:৫৭

শওকত আলী, ঢাকাটাইমস

চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায় আবারও মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়ে অব্যাহত গতিতে ভাঙন চলছে। চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ভাঙনস্থলে সাড়ে তিন হাজার জিও টেক্সটাইল ব্যাগে বালি ভর্তি করে ভাঙনস্থলে ফেলেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

ভাঙনস্থলে ফেলানো বালির বস্তার তদারকি ও কাউন্টিং করছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। বুধবার দিবাগত রাত ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৪৫ মিটার শহররক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক মেঘনায় তলিয়ে গেছে বলে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

বুধবার রাতে ওই এলাকার বাঁধসহ সড়কের প্রায় ২৫ মিটার এলাকায় হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। এতে সড়ক ভেঙে নদীতে ও বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ ভেঙে নদী গর্ভে চলে যায়। এলাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে। শহররক্ষা বাধেঁর ৩৩শ’মিটার এলাকার বাঁধ স্থায়ীভাবে নির্মাণে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভাঙনস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে ৪৫ মিটারের সঙ্গে বাঁধের আরো প্রায় ১০০ মিটার এলাকায় ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন।

ভাঙনের সংবাদ পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাৎক্ষণিক বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলতে শুরু করেছে। নতুন করে আরও তিন হাজার বস্তা ব্যাগ বালু ভর্তি করা হচ্ছে। স্থায়ী ও শক্তিশালী বাঁধ না হলে বাণিজ্যিক এলাকা পুরানবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ি মেঘনায় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা বিমল চৌধুরী বলেন, গত বছর থেকে ভাঙন এলাকাটি খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ওই সময় মন্ত্রীসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনেক কর্মকর্তা ভাঙন স্থান পরিদর্শন করেছেন। ১১শ’ কোটি টাকার প্রকল্পের মাধ্যমে এখানে স্থায়ী বাঁধ হবে বলে আশ্বাস দিলেও এখনও তা করা হচ্ছে না। যখন ভাঙন দেখা দেয় তখন কিছু বালু ভর্তি ব্যাগ ফেলানো হয়, ভাঙন কিছুটা কমলে আর কোনো কাজ হয় না।

তিনি বলেন, গত ২০ দিন আগেও একবার ভাঙন দেখা দেয়। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড যে স্থানটি ঝুঁকিপূর্ণ র্নিধারণ করে সেখানেই এখন ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো  ব্যবস্থা নেয়নি।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন জানান, ভাঙন প্রতিরোধে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রাত থেকেই শ্রমিকরা কাজ করতে শুরু করেছেন। তবে এখানে পানির গভীরতা প্রায় ৬০ ফুট। তারপরেও কাজ বন্ধ নেই।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, বুধবার রাত ১০টায় পুরানবাজার হরিসভা এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন ও  ফাটল দেখা যায়। এ সময় শহর রক্ষা বাঁধের ২৫ মিটারসহ এখন পর্যন্ত ৪৫ মিটার ব্লক নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ৬০ মিটার এলাকাজুড়ে ফাটল দেখা দেয়ায় স্থানীয় লোকজনের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে রাত থেকে সাড়ে তিন হাজার বস্তা বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ভাঙনস্থলে আরো তিন হাজার বালির বস্তা ফেলার জন্য কাজ হচ্ছে। মেঘনা নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ার পাশাপাশি সৃষ্ট ঘূর্ণিপাকে হরিসভাসহ পুরানবাজার ব্যবসায়িক এলাকাটি ঝুঁকিতে রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/কেএম)