দুটি বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চলছে

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২০, ০৭:২৬ | আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২০, ১২:২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পেশাদার বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চলছে বলে মনে করছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তারা সুশীল সমাজ, সংবাদমাধ্যমসহ সর্বসাধারণের আন্তরিক সহযোগিতা চেয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এবং নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জায়েদুল আলম সাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যক্তির কোনো অপকর্মের দায় বাংলাদেশ পুলিশ বহন করে না। অপরাধীকে কঠোর শাস্তি দেওয়ায় পুলিশ সব সময় সর্বাত্মক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তাঁরা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান, যা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

ঘটনার পর নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। ঘটনার পর সাত অভিযুক্ত আদালতে আত্মসমর্পণ করে। তবে এই ঘটনায় অভিযুক্ত বাকি দুইজনকে খুঁজে পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সিনহা নিহত হওয়ার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনা উল্লেখ করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, এ ঘটনায় পুরো দেশের মানুষের মতো বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য দুঃখিত ও মর্মাহত। তবে এ ঘটনাকে উপজীব্য করে অ্যাসোসিয়েশনের ভাষায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম এবং কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করছে। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নানারকম অপপ্রচার চালিয়ে আইনি কার্যক্রমকে প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করার জন্য তৎপর রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ দুটি পেশাদার বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এ অপচেষ্টা দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত।

অ্যাসোসিয়েশন আরও বলছে, সিনহা নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান যৌথ প্রেস ব্রিফিং এ দৃঢ়ভাবে বলেছেন, কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে, তার জন্য ব্যক্তিই দায়ী থাকবেন, প্রতিষ্ঠান দায় নেবে না। অ্যাসোসিয়েশন এই বক্তব্যকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে সাধুবাদ জানাচ্ছে। এ ঘটনার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণে প্রয়োজনীয় সর্বাত্মক আইনি ও প্রশাসনিক সহযোগিতা দেওয়ার যৌথ উদ্যোগ তাদের আশান্বিত করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুলিশ গভীরভাবে বিশ্বাস করে অতীতের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামী দিনগুলোতে দেশ ও মানুষের সেবায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবে।

ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/এসএস/এমআর