কর্মশূন্য এফডিসি, সবাই ব্যস্ত সংগঠন নিয়ে

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২০, ০৯:৪২ | আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২০, ১৬:৩৬

বিনোদন প্রতিবেদক

কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সংকটকাল চলছে। করোনার কারণে সেই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। দেশের সকল সিনেমা হল বন্ধ। দীর্ঘ দিন ধরে শুটিং বন্ধ থাকায় প্রেক্ষাগৃহে নেই নতুন সিনেমা। অনেক সিনেমা হল তো ইতোমধ্যে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। কমে গেছে সিনেমা নির্মাণের সংখ্যাও।

সত্তর, আশি ও নব্বইয়ের দশকে বা তার পরে যেখানে বছরে শতাধিক সিনেমা নির্মিত হতো, আর এখন নানা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং প্রযুক্তিগত অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকার পরেও বছরে সর্বোচ্চ ৩০-৩৫টি সিনেমা নির্মিত হয়।

চলচ্চিত্রে যখন এমন সংকটময় সময় চলছে, সে সময় বিভিন্ন শিল্পী ও সংগঠনের নেতারা ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি নিয়ে। চলচ্চিত্রের আতুর ঘর হিসেবে পরিচিত এফডিসিতে এখন যত না সিনেমার কাজ হচ্ছে, তার চেয়ে সমিতি বেশি। কয়েক মাস ধরে কর্মশূন্য এফডিসি, অথচ চলচ্চিত্রের সবাই ব্যস্ত যার যার সংগঠন নিয়ে।

অসংখ্য সুপারহিট ছবির নায়ক আলেকজান্ডার বো কিছু দিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এফডিসিতে বিভিন্ন সংগঠনে যোগ্য লোকের চেয়ে অযোগ্য লোক চেয়ার দখল করে বসে আছে। আবার নির্বাচনের আগে অনেক নেতাই বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু তা বাস্তবায়নে নেই কারো মাথাব্যথা। তারা ব্যস্ত সমিতি চর্চা নিয়ে।

মাত্র আট একরের একটি জায়গা এফডিসি। শুটিংয়ের জন্য আগে যেখানে নয়টি ফ্লোর ছিল এখন আছে সাতটি। দুটি ফ্লোর বলতে গেলে চ্যানেলওয়ালাদের কাছে চিরস্থায়ী বন্দক দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট পাঁচটিতে কোনো রকমে শুটিং চলে। এখন দেশীয় প্রোডাকশনে বছরে যে কটি সিনেমা নির্মিত হয়, তার মধ্যে দুই-তিনটি টেনেটুনে লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পায়। বাকিরা কেবল আসে আর যায়।

সত্তর-আশির দশকে এফডিসিতে কাজের পরিধি যত বেশি ছিল সংগঠন তত কম ছিল। এখন হয়েছে উল্টো। ছবি কম সংগঠন আর জনসংখ্যা বেশি। আগে তিন চারটি সংগঠন ছিল, এখন আছে ১৮টি! যদিও এদের অধিকাংশেরই অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ আছে জনমনে।

সম্প্রতি নাকি আরও একটি নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সেটির নাম দেয়া হয়েছে ‘চলচ্চিত্র শিল্পী অধিকার রক্ষা ফোরাম’। চলচ্চিত্রের ১৮ পরিবারের আওতাভুক্ত হওয়ায় এফডিসিতে এ নিয়ে সংগঠনের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ১৯টি। চলচ্চিত্রের যেসব শিল্পীরা তাদের ভোটাধিকার ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তারা এ সংগঠনের সদস্য। তাদের অধিকার রক্ষাই সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য।

চলচ্চিত্রের সিনিয়র শিল্পী, প্রযোজক ও পরিচালক মিলিয়ে ১০ জনকে এ সংগঠনের উপদেষ্টা কমিটি করে আত্নপ্রকাশ করেছে নয়া সংগঠনটি। তারা হলেন- প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, শামসুল আলম, মোহাম্মাদ এমডি ইকবাল, আলিমুল্লাহ খোকন, মেহেদি হাসান সিদ্দিকী মনি এবং বিপ্লব শরীফ।

পরিচালকদের মধ্যে সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ও বদিউল আলম খোকন রয়েছেন। আরও আছেন দুই অভিনেতা ওমর সানী ও অমিত হাসান। চলচ্চিত্র শিল্পী অধিকার রক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক করা হয়েছে ফিরোজ শাহী, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান। গত মঙ্গলবার পরিচালক ও প্রযোজক সমিতি থেকে অনুমোদন নিয়ে সংগঠনটি চলচ্চিত্র পরিবারে যুক্ত হয়।

ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এসকেএস/এএইচ