ভ্যাকসিন রাজনীতিতে আমরা কোথায়?

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২০, ১২:১৮ | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২০, ১৪:৪৩

মো. রশিদুর রহমান

এখন এটা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, এ বছরের শেষের দিকে অথবা আগামী বছরেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসবে। এর থেকে লাভবান হবে সেসব দেশ যারা ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন বাজারে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে অথবা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষার শেষ ধাপে অবস্থান করছে। এই দৌড়ে এগিয়ে আছে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া সর্বপ্রথম ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার সফলতার কথা ঘোষণা করেছে। যদিও পুতিনের ভ্যাকসিন রাজনীতি নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছে।

যারা দূরদর্শী অথবা যারা অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসর তারা ইতিমধ্যেই অগ্রিমভাবে ভ্যাকসিন কেনার ব্যাপারে চুক্তি সই করেছে। ফলে তারা স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবে এবং তাদের জনগণ এর থেকে সুফল পাবে। যারা এখনো গড়িমসি করছে তারা নিশ্চিতভাবেই পিছিয়ে থাকবে। আর এর মাধ্যমেই যেকোনো সরকারের সক্ষমতার ব্যাপারটি সবার সামনে খোলাসা হয়ে যাবে।

শুধু চুক্তি করেই বসে থাকলে চলবে না। এর সঠিক বন্টন ব্যবস্থা নির্ধারণ করার জন্য আগেভাগেই মাঠে নামতে হবে। যেমন যুক্তরাজ্য ঠিক করে ফেলেছে তারা কীভাবে এই ভ্যাকসিন কোটি মানুষের দেহে টিকা হিসেবে দিবে। সাথে সাথে এর সংরক্ষণ নিয়ে ভাবতে হবে। ভ্যাকসিনকে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করলেই কেবল এর কার্যকারিতা ঠিকমতো পাওয়া যাবে। রেফ্রিজারেটরে প্লাস ২ থেকে প্লাস ৮ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। কিন্তু ফ্রোজেন ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে মাইনাস ১৫ বা তার থেকে নিচের তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে।

এই তাপমাত্রার সংরক্ষণ উৎপাদন থেকে শুরু করে বাস, বিমান বা জাহাজে পরিবহনের সময় বজায় রাখতে হবে। তা না হলে এর কার্যকারিতা ঠিকমতো পাওয়া যাবে না। যেসব দেশে অবকাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে তাদেরকে এ ব্যাপারে এখনি সতর্ক হতে হবে যেন তারা সঠিকভাবে বন্টন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন রাজনীতি ভূ-রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। যেসব দেশ ভ্যাকসিন বাজারে আনবে তারা কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করবে। সাথে সাথে অনেক দেশকে নিজেদের ক্ষমতা বলয়ের মধ্যে নিয়ে আসবে। এর মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিকভাবে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিবে। তাই এখন ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সক্ষম দেশগুলো সর্বপ্রথম হওয়ার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে তারা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পুরোপুরি প্রমাণের নিজেদের সক্ষমতার কথা মিডিয়ার মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে।

লেখক: পিএইচডি গবেষক, জাপান

ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/ এসকেএস