ভৈরবে ভুল অপারেশনে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২০, ২২:০৪

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ভৈরবে ভুল অপারেশনে খাদিজা বেগম নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় ভৈরব শহরের নিউটাউন এলাকায় অবস্থিত গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনাটি ঘটে। গৃহবধূর স্বামীর নাম কাউসার মিয়া এবং বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার সরাইল উপজেলার ওরাইল গ্রামে।

নিহত খাদিজার শুশুর মলফত আলী অভিযোগে বলেন, আমার পূত্রবধূকে পিত্তে পাথর অপারেশন করতে এনে ডা. মাসুদুর রহমান ভুল অপারেশনে তাকে মেরে ফেলেছে। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহত রোগীকে জোর করে অ্যাম্বুলেন্সে ঢুকিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে বলে। সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের লাশ হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে রাখা ছিল। ঘটনার পর হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, ম্যানেজারসহ সব কর্মচারি  পালিয়ে গেছে।

খাদিজা বেগমের পেটে ব্যথা হলে বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে তার স্বামীসহ অভিভাবকরা গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। তখন ডাক্তাররা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানায় তার পেটে পিত্তে পাথর হয়েছে, তাই অপারেশন করতে হবে। ডাক্তারের কথা মতো বৃহস্পতিবার বিকালেই তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে। শুক্রবার দুপুর দেড়টায় তার অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগী মারা যায় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করে। তার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর অভিভাবককে সমঝোতা করার চেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে।

নিহত খাদিজার চাচা শ্বশুর আলমগীর বলেন, আমার ভাতিজা বউকে হাসপাতালের ডাক্তার মাসুদুর রহমান ভূল অপারেশনে মেরে ফেলেছে। রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা বাড়ি থেকে এসে দেখি লাশ জোর করে অপারেশন রুম থেকে বের করে অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রাখে।

খাদিজার শাশুড়ি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার পূত্রবধূ পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এল। কিন্ত এখন লাশ হয়ে গেল। হাসপাতালের ডাক্তার ভুল অপারেশন করেছে বলেই আমার বউ মারা গেল। আমি বিচার চাই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, ঘটনার খবর পেলেও আমি এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল পরিচালনার আবেদন করলেও তাদেরকে এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। গত তিনদিন আগে সিভিল সার্জনের একটি টিম এই হাসাপাতালে পরিদর্শনে গিয়েছিল। সেদিন হাসপাতালে অনেক অনিয়ম পাওয়া গেছে এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেখাতে পারেনি তারা। ডাক্তার কিভাবে কেমন করে অপারেশন করেছে তা আমি জানিনা। অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত করা হবে বলে তিনি জানান।

এই ঘটনার পর ডাক্তার, নার্স, ম্যানেজার, কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়ায়  তাদের বক্তব্য নেয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের উপদেষ্টা তোফাজ্জল হক জানান, অপারেশনে রোগী মারা যেতেই পারে। অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগী মারা গেছে যা  ডাক্তার বলেছে। এটা একটি দুর্ঘটনা। রোগীর অভিভাবকের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করছি বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/কেএম)