করোনায় চলে গেলেন চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীরও

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২০, ১০:০০ | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২০, ১১:১০

নিজস্ব প্রতিদেবক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশে প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনায় প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন শত শত মানুষ।  দীর্ঘ হচ্ছে মৃত মানুষের তালিকাও। চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া অদৃশ্য এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে। এবার মৃতের তালিকায় যুক্ত হলো দেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীরের নাম।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

শিল্পীর পারিবারিক বন্ধু আলোকচিত্রী মোহাম্মদ আসাদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এমআইসিইউ) ভর্তি করা হয় মুর্তজা বশীরকে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মুর্তজা বশীরের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া তিনি হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। শুক্রবার সকাল থেকে তার পালস পাওয়া যাচ্ছিল না৷ পরে শনিবার সকাল সোয়া নয়টার কিছু আগে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷

ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছেলে চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর। ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার রমনায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ৮৮ বছর বয়সী এ চিত্রশিল্পী এর আগেও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।

বাংলাদেশে বিমূর্ত বাস্তবতার চিত্রকলার অন্যতম পথিকৃৎ মুর্তজা বশীরের ‘দেয়াল’, ‘শহীদ শিরোনাম’, ‘পাখা’ ছাড়াও বেশকিছু উল্লেখযোগ্য চিত্রমালা রয়েছে।‘রক্তাক্ত ২১শে’শিরোনামে ভাষা আন্দোলন নিয়ে ‘লিনোকাট’ মাধ্যমে একটি চিত্রকর্ম রয়েছে তার। পেইন্টিং ছাড়াও ম্যুরাল, ছাপচিত্রসহ চিত্রকলার বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি কাজ করেছেন।

‘টাটকার রক্তের ক্ষীণরেখা’শিরোনামে একটি বইতে নিজের লেখা কবিতার ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেছেন মুর্তজা বশীর। ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা উপন্যাস ‘আলট্রামেরিন’। মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন।

মুর্তজা বশীর ঢাকা গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্টস (বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউট) থেকে শিক্ষালাভ করেন। তিনি একাধারে চিত্রশিল্পী, কার্টুনিস্ট, কবি, লেখক, গবেষক। ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। কর্মজীবনে মুর্তজা বশীর দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চিত্রকলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে একুশে পদক পান মুর্তজা বশীর; স্বাধীনতা পুরস্কার পান ২০১৯ সালে।

ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/এমআর