প্রতি জেলায় প্লাজমা সেন্টার চান জাফরুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট ২০২০, ১৭:০৫

প্রতি জেলায় প্লাজমা সেন্টার হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শনিবার ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্যে নগর হাসপাতালে প্লাজমা সেন্টার উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস বিভিন্ন রকম উপসর্গ সৃষ্টি করে। রোগ ভালো হলেও কাউকে খুব দুর্বল করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে প্লাজমা প্রদানের বিষয়টি আরও অনেক প্রচার হওয়া দরকার। অধ্যাপক এম এ খানের নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় প্লাজমা সেন্টার হওয়া দরকার।

গণস্বাস্থ্যের প্লাজমা সেন্টারে প্রতিদিন ২৫ জন করোনামুক্ত রোগীর রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্লাজমা দেয়ার কতগুলো নিয়ম আছে। অত্যন্ত সায়েন্টিফিক নিয়ম মেনে প্লাজমা নেব।

হেমাটো অনকোলজিস্ট অধ্যাপক এম এ খান বলেন, প্লাজমা দুই পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয়। ওটাকে প্লাজমাফেরিসস, যা করা হয় একটা মেশিনের সাহায্যে। সেটা ব্যয়বহুল ৩০ থেকে ৪০ লাখ একটা মেশিনের দাম। নমুনা সংগ্রহ করতে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাগে। আরেকটা পদ্ধতি হলো, করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠা রোগীর রক্তের নমুনা থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা। এখানে সমস্যা হলো, একজন থেকে যে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়েছে তা শুধু একজনকে শুধু একবার দেয়া যাবে।

এম এ খান বলেন, বর্তমানে প্লাজমার চাহিদা কমে গেছে। মানুষের আতঙ্ক কমে গেছে। আমার মনে হয় সেপ্টেম্বরের দিকে করোনা ডিক্লাইন ফেইজের দিকে আসবে, আস্তে আস্তে কমতে থাকবে।

বিশিষ্ট এই চিকিৎসক বলেন, প্লাজমা থেরাপি কোন সময়ে কাকে দিতে হবে, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগে থেকে প্ল্যান করি, বয়স্ক রোগী যারা রয়েছেন, তাদেরকে যদি আমরা কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে যদি দিতে পারি, এটা হলো উত্তম। কারণ সুনির্দিষ্ট ভ্যাকসিন আসার আগ পর্যন্ত এটা খুব কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি নয়, কারণ আমরা জানি, অ্যান্টিভাইরাস যেগুলো ব্যবহার হচ্ছে এবং ইনজেকশন ফর্মে যেসব ওষুধ ব্যবহার হচ্ছে, এগুলো কমপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, বড় চ্যালেঞ্জ হলো ডোনারদের কারও কারও নমুনা অ্যান্টিবডি কম থাকে। যারা অধিকমাত্রায় আক্রান্ত হন, যাদের মধ্যে লক্ষণ উপসর্গ বেশি থাকে, তাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি বেশি থাকে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, অ্যান্টিবডি পরিমাপ করা। কিছু কিছু জায়গায় অ্যান্টিবডি টেস্ট হচ্ছে। প্লাজমার মূল শক্তি হচ্ছে অ্যান্টিবডি। কারণ এটা ভাইরাসের গায়ে লেগে, ভাইরাসটাকে অকেজো করে দেয়, তখন ভাইরাস আর সেলের মধ্যে ঢুকতে পারে না। অ্যান্টিবডি টেস্ট দ্রুত করা দরকার। প্লাজমা দিতে হবে প্রথম দিকে। প্রথম দিকে শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ বেশি থাকে।

গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের আইসিইউ প্রধান নাজির মোহাম্মদ বলেন, অ্যান্টিবডির যে লেভেলটা বিভিন্ন রকম পেশেন্টের বিভিন্ন রকম লেভেল আসে। যেমন যাদের কি না খুব কম লক্ষণের মধ্যে যারা সেরে যায়। এখন তাদের দেখা যাচ্ছে। ৩০ দিন পরে টেস্ট করে দেখা গেল, তাদের লেভেল নাই অ্যান্টিবডির। তাদের খুব লো লেভেল। অনেকে আগে ১০০ দিনের মধ্যে ৩৪ দিনে ওয়ান থার্ড করে নেমে যায়। এটা আরেকটা গ্রুপ অ্যান্টিবডির মধ্যে ২০ রকমের অ্যান্টিবডি স্টাডি হয়েছে। দুইটা খুব বিপজ্জনক। এখনো পর্যন্ত করোনার সবচেয়ে বড় ডাইলেমা যেটা, অ্যাটাকটা কোন দিক দিয়ে করবে? অ্যান্টিবডিটা হলো প্যাসিভ ইমিউনিটি। আর ভ্যাক্সিনেশন হলো অ্যাকটিভ ইমিউনিটি। আর একটা অপশন হলো, মেডিসিন দিয়ে মারা যায় কি না।

তিনি বলেন, মেডিসিনের মধ্যে রেমডিসিভির ছাড়া অন্য কোনো ড্রাগ ইউনিফর্ম রেজাল্ট দেয়নি। রেমডিসিভির দিয়ে কিউর করা যায় ১১ দিনের মধ্যে। চার দিনের জন্য আপনি ৫০ হাজার টাকা খরচ করবেন কি না চারদিন ধৈর্য ধরলেই আপনার ৫০ হাজার।

উদ্বোধনী বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও নগর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোলাম মো. কোরাইশী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কিট উদ্ভাবক অনু বিজ্ঞানী বিজন কুমার শী, অধ্যাপক ডা. শওকত আরমান, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের মাইক্রো ভাইওলজির প্রধান অধ্যাপক ডা. মাহবুবুর রহমান, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুল হক।

(ঢাকটাইমস/১৫আগস্ট/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :