কোভিড-১৯ ও কমিউনিটি এডুকেশন প্রোগ্রাম

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০২০, ১৪:৪৭

রবিউন নাহার তমা

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস তার ভয়াল থাবা চালিয়েই যাচ্ছে। এতে বিশ্ব-অর্থনীতির পাশাপাশি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থাও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরেই। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ ক্ষতিকে পুষিয়ে উঠতে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস।

প্রথমদিকে বেশ উপস্থিতি থাকলেও দিন দিন তা কমে যাচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থার এ করুণ দশা দেখে এগিয়ে এসেছেন ইতালির রোমে বসবাসরত ইউনিভার্সিটি অব রোম তর ভেরগাতার কয়েকজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তারা গঠন করেন “Community Education Program" বা CEP. গত ৭ জুলাই CEP তাদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে।

মূল উদ্যোক্তা সুজন খান এবং রিদওয়ান ইকবাল জানান, শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করাটাই তাদের মূল লক্ষ্য। কোভিড-১৯ ভয়াবহতার কারণে অনেক প্রবাসীই তাদের চাকরি হারিয়েছেন। অনলাইনে স্কুলের ক্লাস করলে যেহেতু পেমেন্টের ব্যাপার থাকে সেহেতু অনেকেই এখানে অপারগ। তাই তারা ওয়ান টু ইলেভেন স্ট্যান্ডার্ড পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছেন। CEP এর আরেকজন সহপ্রতিষ্ঠাতা দিলশাদ মোস্তারীন জানান গত ৭ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত তাদের রেজিস্ট্রেশন ছিল। মোট ৫৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করে। সোম থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাসের পর শুক্রবার সাপ্তাহিক পরীক্ষা। তাদের প্রথম পরীক্ষা এবং ফলাফল প্রণয়ন দেখে আরও অনেক অভিভাবক যোগাযোগ শুরু করেন। নতুন করে আবারো রেজিস্ট্রেশন শুরু করতে হয়।

বর্তমানে এক মাসের মধ্যেই CEP এর কার্যক্রমে ১১০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী অনলাইনে ফ্রি ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে। মূলত ক্যামব্রিজ কারিকুলামের ভিত্তিতে পাঠদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই ইতালি প্রবাসী বাঙালি, ভারতীয় বা শ্রীলঙ্কান হলেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরাও কমিউনিটি এডুকেশন প্রোগ্রাম এ ফ্রি অনলাইন ক্লাস করছেন। বাংলাদেশে CEP এর টিম লিডার হিসেবে কাজ করছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের শিক্ষার্থী নাজিফা মীম।

মীম জানালেন টিম লিডার হিসেবে কাজ করে তার ভালো লাগার অনুভূতির কথা। তিনি বলেন-আসলে শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি ভেবেই ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারলেও নিজেদের সিলেবাস নিয়ে এই মুহূর্তে বিপাকে পড়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আমাদের এই উদ্যোগ যদি তাদের বিন্দুমাত্র সহায়তা করতে পারে তাহলেই আমরা খুশি। কমিউনিটি এডুকেশন প্রোগ্রামের সাথে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে তাদের এই উদ্যোগ দেখে দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা এরকম আরোও উদ্যোগ নেবে এবং এই মহামারির মধ্যেও শিক্ষা-ব্যবস্থাকে সচল রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

লেখক: শিক্ষক

ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এসকেএস