আইভি রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ভৈরবে নানা কর্মসূচি

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট ২০২০, ১৬:২৯

আইভি রহমানের ১৬ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতিবছরের মতো এবারও ভৈরবে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার সকাল ৭টায় ভৈরব বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ করবেন দলীয় নেতারা। এছাড়াও সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে খতমে কোরআন।

এছাড়া সকাল ৯টায় ভৈরব ট্টমা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় নির্মিত আইভি স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবে দলীয় নেতাকর্মীসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সকাল ১০টায় দলীয় কার্যালয়ে শহীদ আইভি রহমানের প্রতিকৃতিতে দলীয় নেতারা ফুলের মালা দেবেন। বাদ জোহর প্রতিটি মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ দোয়া, মিলাদ মাহফিলসহ মোনাজাত।

অন্যদিকে সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলা পৌর আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল।

২৪ আগস্ট বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের অন্যতম অগ্রদূত, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী আইভি রহমানের ১৬ তম শাহাদাতবার্ষিকী। তিনি ছিলেন মরহুম রাষ্ট্রপতি আলহাজ জিল্লুর রহমানের স্ত্রী এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ও জাতীয় সংসদের কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপনের মা।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিন দিন পর ২৪ আগস্ট তিনি মারা যান।

১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব শহরের চণ্ডীবের গ্রামে আইভি রহমানের জন্ম। বাবা মরহুম জালাল উদ্দিন আহমেদ ছিলেন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ। ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ। মা হাসিনা বেগম ছিলেন আদর্শ গৃহিণী। আট বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে আইভি ছিলেন পঞ্চম।

তাঁর পুরো নাম জেবুন্নাহার আইভি। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম মো. জিল্লুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হলে নামের পরে ‘রহমান’ যুক্ত হয়। এ নামেই তিনি পরিচিতি পান দেশব্যাপী।

শুধু আওয়ামী রাজনীতির জন্য নয়, আইভি রহমান বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে পারিবারিকভাবেও জড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার খালাশাশুড়ি। একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন, দুই মেয়ে তানিয়া বখত, ময়না এবং তাদের ছেলেমেয়ে ও স্বামী জিল্লুর রহমানকে নিয়ে তার পারিবারিক জীবন ছিল সুখময়।

বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্যা আইভি রহমান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির বর্ণাঢ্য জীবন শুরু করেন। ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শোষিত বাংলা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায় সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি তখন ছাত্রলীগের প্রথম সারির নেত্রী এবং নীতিনির্ধারক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ভারতে গিয়ে সশস্ত্র ট্রেনিং গ্রহণ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য হন। ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।

রাজনীতি ছাড়াও তিনি আজীবন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজকে বেঁধে রেখেছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সভানেত্রী ও জাতীয় অন্ধকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। নারীর অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এবং সমাজের অবহেলিত শিশু, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে তার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা অবিস্মরণীয়।

(ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :