২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: সর্ব ইউরোপিয়ান আ.লীগের সভা

গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘২১ আগস্ট ২০০৪: ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়’ শীর্ষক সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ও হেদায়েতুউল ইসলাম শেলীর যৌথ সঞ্চালনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান এমপি।

ফারুক খান এমপি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের সমাবেশে আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম, সেদিন আমাদের সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল- সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী। সেদিন আমাদের সমাবেশে বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রটোকল অনুয়ায়ী কোন প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি আমাদের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে কোন প্রকার নিরাপত্তার জন্য অনুমতি দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, বিকাল ৫:২৫ মিনিটের দিকে জননেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলা শুরু হয়। প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম বোমা হামলা, পরে বুঝতে বাকি রইল না যে, সেগুলো ছিল গ্রেনেড হামলা। আর হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল যুদ্ধে ব্যবহার করা গ্রেনেড । মোট ১৬টা গ্রেনেডের মধ্যে ১৩টা বিস্ফোরিত হয়, বাকি ৩টি অবিস্ফোরিত থাকে। আমরা যদি মনে করি, প্রত্যেকেটা গ্রেনেডে পাঁচ হাজার করে স্পিন্টার থাকে- তাহলে সেদিন মোট ৬৫ হাজার স্পিন্টার চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। আল্লাহর ইচ্ছায় সৌভাগ্যক্রমে একটা স্পিন্টারও আমাদের নেত্রীকে স্পর্শ করেনি। সেদিন পুলিশ আমাদের সাহায্য না করে উল্টা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জ শুরু করে। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করার মূল কারণ ছিল সেই সুযোগে গ্রেনেড হামলার মূলহোতাদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। সেদিনের সেই গ্রেনেড হামলা ছিল পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে আওয়ামী লীগের নাম-নিশানা মুছে ফেলা।

ফারুক খান আরো বলেন, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রবাসে বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করুন।

সভাপতির বক্তব্যে এম. নজরুল ইসলাম বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসরা একুশে আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি চিরতরে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ওই গণদুশমনরা বাংলা ও বাঙালির মধ্যমণি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার গভীর চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে।

তিনি একুশে আগস্টের নারকীয় বর্বরতার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী সেই তথাকথিত হাওয়া ভবনের কুশীলবর, সন্ত্রাস ও লুটপাটের রাজপুত্র তারেক জিয়াকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাথে বিএনপি-জামায়াত সরাসরি জড়িত ছিল। এই হামলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। গ্রেনেড হামলার মূলহোতা তারেক জিয়াকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, জার্মান আওয়ামী লীগের সভাপতি বসিরুল আলম চৌধুরী সাবু, ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজী, নেদারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন তপন, পর্তুগাল আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল আলম জসিম, অষ্টিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা মজুমদার বাচ্চু, সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের ভারপ্রাাপ্ত সভাপতি এম এ কাশেম, নরওয়ে আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান, সুইডেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. ফরহাদ আলী খান, নেদারল্যান্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক মুরাদ খান, ডেনমার্ক আ’লীগের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম, স্পেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিজভী আলম, পর্তুগাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান, গ্রীস আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল আহমেদ লিটন, মাল্টা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাওছার আমিন হওলাদার, জার্মান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, সুইডেন যুবলীগের আহ্বায়ক যুবাইদুল হক সবুজ ও সাংবাদিক কমরেড খোন্দকার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের কারিগরি সহযোগিতা করেন ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান ভূইয়া।

(ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/এলএ)